close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো ৪ যুবকের বিষপান, হাসপাতালে ভর্তি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো চার যুবক আজ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে বিষপান করে আবারও জাতির দৃষ্টি কাড়লেন। পুনর্বাসন ও উন্নত চিকিৎসার দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন অবহেলিত এই তরুণদের ক্ষোভ এবার বিষে রূপ নিল। সর..

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট আজ পরিণত হলো এক হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী। জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো চার প্রতিবাদী যুবক—শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন (আবু তাহের)—একসঙ্গে বিষপান করে জীবন ঝুঁকিতে ফেলে দেন। ঘটনাটি ঘটে হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ে একটি চলমান বৈঠকের সময়।

চোখ হারানো এই তরুণরা দীর্ঘ নয় মাস ধরে উন্নত চিকিৎসা ও পূর্ণবাসনের দাবিতে বিভিন্নভাবে সোচ্চার থেকেছেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না আসায় তারা চরম হতাশায় ভুগছিলেন। আজ তাদের এই আত্মঘাতী প্রতিবাদ যেন পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও’র সঙ্গে হাসপাতালের পরিচালকের একটি বৈঠক চলছিল। সেই সময় ওই চার যুবক দাবিগুলো তুলে ধরতে সিইও’র কক্ষে প্রবেশ করেন। কিন্তু সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে, ক্ষুব্ধ হয়ে তারা সেখানেই বিষপান করেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা আগেই বিষ সঙ্গে করে এনেছিলেন।

ঘটনার পর পরই তাদের দ্রুত শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

আহতদের একজন বলেন, “এই সরকারের কাছ থেকে কিছু পেতে হলে আন্দোলনে নামতে হয়। শান্তিপূর্ণভাবে কিছু চাওয়া যায় না। চিকিৎসার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি।”

তাদের অভিযোগ, শুধুমাত্র সরকার নয়, রাজনীতিক দলগুলোর ভূমিকাও অত্যন্ত হতাশাজনক। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, এমনকি গণঅধিকার পরিষদের কেউই চোখ হারানো এই যুবকদের পাশে দাঁড়ায়নি। সবাই ব্যস্ত নিজের স্বার্থ নিয়ে।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, “আজ আমাদের মিটিং চলাকালেই চারজন বিষপান করেন। তাদের অবস্থা এখন স্থিতিশীল।” তিনি জানান, তাদের মধ্যে একজন এক মাস আগে সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে ফিরে এসেছেন।

বর্তমানে হাসপাতালে ৫৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন, যাদের মধ্যে ৪৬ জন শারীরিকভাবে সুস্থ। তবে মানসিক অবস্থা এখনও দুর্বল। অনেকেই মনে করছেন, হাসপাতাল ত্যাগ করলে পূর্ণবাসন ও নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়তে হবে। সেই আশঙ্কা থেকেই তারা এখনও হাসপাতালে থেকে যেতে চাচ্ছেন।

এই ঘটনার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—আন্দোলনে চোখ হারানো তরুণদের এই আত্মত্যাগমূলক প্রতিবাদ কবে রাষ্ট্রের বিবেক নাড়াবে? শুধু ঘোষণায় নয়, বাস্তব পদক্ষেপে কি সরকার এগিয়ে আসবে?

এখন দেখার বিষয়, রাষ্ট্র কি এবার তাদের করুণ আর্তনাদ শুনবে? নাকি এই বিষপানও হারিয়ে যাবে আরও একটি ফাইলের নিচে চাপা পড়ে?

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি