close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে প্রতিরক্ষা খাতে বিপ্লবী পদক্ষেপ: কানাডাকে ‘নিজের পায়ে দাঁড়াতে’ চান কার্নি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হুমকি ও শুল্কের জবাবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি প্রতিরক্ষা শক্তি জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন। আত্মনির্ভরশীল কানাডা গড়ার অঙ্গীকার করে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমাতে চাচ্..

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে কানাডা এখন তার প্রতিরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি সক্রিয়। কানাডার নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি সম্প্রতি এক নির্বাচনী সমাবেশে ঘোষণা দিয়েছেন—তিনি দেশকে আত্মনির্ভরশীল করতে চান এবং প্রতিরক্ষা খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন।

এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি কার্যত বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন। কার্নি বলেন, "আমরা আর কারও ছায়ায় থাকতে চাই না। কানাডাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে।"

উল্লেখ্য, গত মার্চে জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর কার্নি কানাডার প্রধানমন্ত্রী হন। তবে তিনি এখনো পূর্ণ মেয়াদে নির্বাচিত হননি। আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনে তিনি তার লিবারেল পার্টিকে জয়ী করে আনতে চান। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পোলিয়েভরে।

কার্নির এই সাহসী অবস্থানের পেছনে একটি বড় কারণ হলো সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পদক্ষেপ। ট্রাম্প কেবল কানাডার ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেননি, বরং তিনি প্রকাশ্যে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের “৫১তম রাজ্য” হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। এই মন্তব্য অনেক কানাডীয় নাগরিক ও রাজনীতিবিদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।

কার্নি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আমেরিকা আমাদের ভাঙতে চায় যাতে তারা আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু কানাডা কখনোই আমেরিকার অংশ হবে না।”

তার রূপরেখা অনুযায়ী, কানাডা এখন থেকে প্রতিরক্ষা খাতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশের বেশি ব্যয় করবে, যা ন্যাটোর মানদণ্ডের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

তিনি আরও জানান, কানাডা শিগগিরই নতুন সাবমেরিন, আধুনিক ড্রোন, এবং বরফভেদকারী যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহে যাচ্ছে। পাশাপাশি ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে যৌথ নিরাপত্তা জোটকে আরও শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

তবে কার্নির প্রতিরক্ষা কৌশল কেবল সামরিক খাতে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি একটি বড় অর্থনৈতিক রূপরেখাও ঘোষণা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে আয়কর হ্রাস, নতুন বাণিজ্য বহুমুখীকরণ তহবিল গঠন, এবং বাজেট ভারসাম্য বজায় রাখার পরিকল্পনা।

তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, এই বাজেট ব্যবস্থাপনায় কখনোই স্বাস্থ্যসেবা ও পেনশন খাতে কোনো রকমের কাটছাঁট করা হবে না। বরং এই খাতগুলো আরও শক্তিশালী করা হবে।

অন্যদিকে, প্রধান বিরোধী নেতা পিয়েরে পোলিয়েভরে-এর নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টিও প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর পক্ষে। তবে তারা এই ব্যয়ের অর্থ সংগ্রহ করতে বিদেশি সহায়তা খাতে কাঁটছাঁট করার প্রস্তাব দিয়েছে।

শেষ কথা:

কার্নির এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেশটির রাজনৈতিক আবহে বড় ধরনের পরিবর্তন ডেকে আনতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা চাপের জবাবে কানাডা এখন তার আত্মমর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষার পথে নতুনভাবে এগোচ্ছে। আগামী নির্বাচন ঠিক করে দেবে, জনগণ কী ধরনের কানাডা চায়—যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর এক কানাডা, নাকি আত্মনির্ভর ও শক্তিশালী এক রাষ্ট্র।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator