close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

যুক্তরাষ্ট্র ঢুকলেই অগ্নিগর্ভ মধ্যপ্রাচ্য: ইরানপন্থী মিলিশিয়ার রক্তাক্ত হুঁশিয়ারি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়ালে রক্তক্ষয়ী প্রতিশোধ আসন্ন—হরমুজ প্রণালি বন্ধ, মার্কিন ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া ও আকাশপথে ভয়ানক হামলার হুমকি দিল ইরান-সমর্থিত ইরাকি শিয়া মিলিশিয়া কাতায়েব হিজবুল্লাহ।..

মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন যুদ্ধের গন্ধ! ইরান-সমর্থিত ইরাকি শিয়া মিলিশিয়াগোষ্ঠী কাতায়েব হিজবুল্লাহ সাফ জানিয়ে দিয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে প্রবেশ করে, তাহলে গোটা অঞ্চল জ্বলবে। যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক সামরিক ঘাঁটি রক্তাক্ত প্রতিশোধের লক্ষ্যবস্তু হবে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মিলিশিয়াগোষ্ঠীটি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এমনই এক আগুনঝরা হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

সংগঠনটির নিরাপত্তা প্রধান আবু আলী আল-আস্কারি স্পষ্ট ভাষায় বলেন—যদি যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে জড়ায়, তবে উন্মাদ ট্রাম্প তার স্বপ্নে দেখা ট্রিলিয়ন ডলারও এখান থেকে ফেরত পাবে না। আমাদের অপারেশনাল পরিকল্পনা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।

এখানেই শেষ নয়—আল-আস্কারি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, পারস্য উপসাগর থেকে লোহিত সাগর পর্যন্ত মার্কিন স্বার্থের সব রাস্তাই বন্ধ করে দেওয়া হবে। তার ভাষায়,-হরমুজ প্রণালি ও বাব-আল-মানদেব প্রণালি—দুটিই অবরুদ্ধ করা হবে। লোহিত সাগরের তীরবর্তী তেলবন্দরগুলো অচল হয়ে পড়বে। এবং আকাশপথে মার্কিন বিমানগুলোর জন্য অপেক্ষা করছে আরও অপ্রত্যাশিত চমক।

এই হুঁশিয়ারির পেছনে আছে বাস্তব এক ইতিহাস। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, কাতায়েব হিজবুল্লাহ একটি ড্রোন হামলা চালিয়ে জর্দানের সীমান্তবর্তী "টাওয়ার ২২" নামক মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে তিনজন সেনা হত্যা ও ৩০ জনের বেশি আহত করেছে। এই হামলার রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি।

এই ঘটনার পর ইরান-ঘনিষ্ঠ একটি ছাতার নিচে থাকা শিয়া গোষ্ঠীগুলো—‘ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ইন ইরাক’—জানায়, তারা জর্দান-সিরিয়া সীমান্তে একাধিক হামলা চালিয়েছে। তাদের টার্গেটে ছিল আল-রুকবান শরণার্থী শিবির, যা “টাওয়ার ২২”-এর খুব কাছেই অবস্থিত।

এদিকে মার্কিন রাজনীতিতেও চলছে টানাপোড়েন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বক্তব্যে বলেন,-ইরানের ওপর সামরিক আঘাত হানার আগে আমি দুই সপ্তাহ সময় দেব কূটনৈতিক সমাধানের জন্য।”

তবে কাতায়েব হিজবুল্লাহর বিবৃতি বলছে ভিন্ন কথা। তারা কূটনীতির নয়, প্রস্তুত অপারেশনাল যুদ্ধপরিকল্পনার কথা বলছে—যার লক্ষ্য হচ্ছে গোটা অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতিকে চূর্ণ করা।

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য সামরিক ঘাঁটি, নৌবহর ও বিমানঘাঁটি রয়েছে—যেগুলো এখন সরাসরি হুমকির মুখে। ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়াদের এমন হুমকি শুধু ইরাকেই নয়, ছড়িয়ে পড়তে পারে সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন ও গাজা পর্যন্ত।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি ইসরায়েল-গাজা সংঘাত থেকে একেবারে আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে। যেখানে বড় শক্তিগুলোর সরাসরি অংশগ্রহণ মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিদ্যমান উত্তেজনা আরও একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে কাতায়েব হিজবুল্লাহর এই বিবৃতি। তারা শুধু হুঁশিয়ারি দেয়নি, বরং সরাসরি জানিয়েছে—তাদের অস্ত্র, পরিকল্পনা ও লক্ষ্যবস্তু সব প্রস্তুত। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা—যুক্তরাষ্ট্র কি আসলেই এই সংঘাতে ঢুকবে?

No comments found