close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

যুদ্ধের মধ্যে এবার মাখোঁ-পেজেশকিয়ান ফোনালাপ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বিশ্বকে চমকে দিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাখোঁর মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে। আলোচনায় উঠে এসেছে পরমাণু কর্মসূচি, যুদ্ধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার বার..

মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে যখন যুদ্ধের দামামা বাজছে, গাজার মাটি রক্তাক্ত, আর ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ পাল্টাপাল্টি হামলায় দগ্ধ গোটা অঞ্চল — ঠিক তখনই কূটনৈতিক মহলে এক অভাবনীয় ঘটনা ঘটেছে।
ফোনে মুখোমুখি হয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এবং সদ্য দায়িত্ব নেওয়া ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। এই ফোনালাপ শুধু দুই দেশের সম্পর্কই নয়, বরং গোটা বিশ্ব রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় তৈরি করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সারাবিশ্বের নজর ছিল এই আলোচনায়। কারণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল এমন এক ইস্যু — যা গত এক দশক ধরে বিশ্বশক্তিগুলোর মাথাব্যথার কারণ: ইরানের পরমাণু কর্মসূচি
আল জাজিরার সূত্র মতে, এই ফোনালাপে ইরান ও ইউরোপীয় শক্তিগুলোর মধ্যকার পরমাণু আলোচনার অচলাবস্থা এবং সেটিকে আবার সচল করার সম্ভাব্য উপায় নিয়ে সরাসরি আলোচনা হয়েছে।

মাখোঁ ফোনালাপ শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (X)-এ স্পষ্টভাবে লেখেন,আমি জোর দিয়ে বলেছি— ইরান যেন কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন না করে। আমাদের প্রয়োজন শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যের নিশ্চয়তা।”

তিনি আরও বলেন,আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসার পথ আছে। আমরা এখনই চাইলে আরও ভয়াবহ বিপর্যয় এড়াতে পারি।

ফোনালাপে ইরান স্পষ্টভাবে তাদের অবস্থান তুলে ধরেছে। প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন,আমরা কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চাই না। তবে ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু গবেষণা ও শক্তি ব্যবহারের অধিকার সবসময়ই সংরক্ষিত থাকবে।

এই বক্তব্য কূটনীতিকদের দৃষ্টি কেড়েছে। কারণ পশ্চিমা বিশ্ব বহুদিন ধরে দাবি করে আসছে— ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্রের দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু এবার সরাসরি প্রেসিডেন্ট পর্যায় থেকে এমন মন্তব্য ইঙ্গিত দেয়— আলোচনার নতুন দিগন্ত তৈরি হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ফোনালাপ মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে একটি কূটনৈতিক টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। বিশেষ করে এমন সময়, যখন লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে এবং গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে প্রতিদিনই প্রাণহানি ঘটছে।

এই আলোচনার মধ্য দিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব এবং ইরান আবারও ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি (JCPOA)-তে ফিরতে চাচ্ছে কি না — সেটিও প্রশ্ন হিসেবে উঠে এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন,যদি এই যোগাযোগ অব্যাহত থাকে, তবে এটি শুধু পারমাণবিক ইস্যুতেই নয়, বরং যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাব্য প্রথম পদক্ষেপ হিসেবেও বিবেচিত হবে।

বিশ্বব্যাপী যেখানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইসরায়েল-গাজা সংঘর্ষ, চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা— সব মিলিয়ে একটি ভয়ঙ্কর সময় পার করছে বিশ্ব, সেখানে ইরান ও ফ্রান্সের এই আলোচনাকে কূটনৈতিক শান্তির এক ঝলক বলেই মনে করছেন অনেকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে,এই ফোনালাপ ভবিষ্যতের জন্য এক আশার সেতু। শান্তি আলোচনায় নেতৃত্ব দিতে চাইলে এখনই সময়।

বিশ্ব যখন যুদ্ধ ও সংঘর্ষের মধ্যে দিকভ্রান্ত, তখন ইরান-ফ্রান্সের মধ্যে এমন এক গঠনমূলক ফোনালাপ নিঃসন্দেহে এক আশার আলো।
এই সংলাপ যদি ভবিষ্যতের আলোচনা ও সমঝোতার পথে এগিয়ে যায়, তবে এটি কেবল দুটি দেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই একটি বড় বিজয় হবে।

لم يتم العثور على تعليقات