যুদ্ধবিরতি শুরুর আগে আরও একঝাঁক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ইরানের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কিছু সময় আগেই ইরান ইসরায়েলে একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েলও। নিহত অন্তত ১৩, আহত অর্ধশতাধিক। এই আগুন-লেলিহান পরিস্থিত..

মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আবারও ভয়াল ছায়া: যুদ্ধবিরতির পূর্বমুহূর্তে ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলায় বিধ্বস্ত জনপদ।

২৪ জুন, মঙ্গলবার, বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার ভিত্তিতে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু তার ঠিক আগমুহূর্তেই মধ্যপ্রাচ্য কেঁপে উঠলো একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণে।

ইরানের পাল্টা প্রতিশোধ: ইসরায়েলে ভয়াবহ হামলা
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এবং সিএনএন নিশ্চিত করেছে—যুদ্ধবিরতির ঠিক আগে ইরান ইসরায়েলের দখলকৃত অঞ্চলে দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৪ জন, আহত হয়েছেন ২২ জন, যাদের মধ্যে বহুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ইসরায়েলি জরুরি সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (MDA) জানিয়েছে, রাজধানী তেলআবিবের বেশ কিছু স্থানে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশ ছুঁয়েছে। একাধিক ভবন ধসে পড়েছে বা আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেককে ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

ইসরায়েলের জবাব: ইরানের আবাসিকে পাল্টা হামলা
ইরান হামলার পাল্টা জবাব দিতে সময় নেয়নি ইসরায়েল। একই সময়ে ইরানের আবাসিক ভবনে চালানো হামলায় নিহত হয়েছেন ৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৩০ জনের বেশি। ইরানের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দিলেও, দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি হামলার দৃশ্য সম্প্রচার করেছে।

যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে তিনি লেখেন

ইসরায়েল-ইরান এখন যুদ্ধবিরতির সম্মতিতে পৌঁছেছে। কেউ যেন তা লঙ্ঘন না করে।

কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সংশয় তৈরি হয়েছে এই যুদ্ধবিরতি আদৌ কার্যকর হবে কি না। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়

যুদ্ধবিরতি মানা হবে, তবে তা লঙ্ঘন করলে চরম প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ১৩ জুন রাতের আধারে ইসরায়েল হঠাৎ ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামক প্রচণ্ড সামরিক অভিযান চালায়। এতে মৃত্যু হয় ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি, এবং পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৫০০-র বেশি মানুষ নিহত হন।

এই হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ নামে বড়সড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যা ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে গভীরে আঘাত হানে। এতে ইসরায়েল ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে, যদিও হতাহতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।

২১ জুন গভীর রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে ইরান কাতার ও ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা করে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা কেবল ইরান-ইসরায়েল নয়—এবার যুক্তরাষ্ট্রকেও সরাসরি টেনে এনেছে সংঘাতে।

যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। দুই পক্ষই সামরিক প্রস্তুতি রাখছে, এবং যুদ্ধবিরতির সীমা লঙ্ঘিত হলে আরও ভয়াবহ সংঘাতের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র, অন্যদিকে ইসলামি প্রভাব বলয়—এই উত্তপ্ত অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যকে ঠেলে দিতে পারে আরেকটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের মুখে।

No comments found


News Card Generator