চাঁদাবাজির অডিও ফাঁস! যুবদল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের ঝড়
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন নয়নের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী আইন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মচারী, যাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে বলা হয়— “বাঁচতে চাইলে দ্রুত এক লাখ টাকা বিকাশ করো।”
গত শুক্রবার নয়নের চাঁদা দাবির বেশ কিছু অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই ঘটনায় স্থানীয় রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
কী ছিল সেই অডিওতে?
অডিওতে শোনা যায়, নয়ন সরাসরি ভুক্তভোগী মো. সাকায়েত উল্যাকে বলেন—
“আপনাকে চাকরি দিয়েছে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। কিন্তু গত নির্বাচনে আপনি নৌকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তাই আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে এক লাখ টাকা দিবেন। না দিলে পরিণাম কী হবে, তা কল্পনাও করতে পারবেন না। তৃতীয় কেউ জানতে পারলে আপনার ঘাড় বাঁকা করে ফেলব।”
ভুক্তভোগীর অভিযোগ ও আইনি পদক্ষেপ
আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী সাকায়েত উল্যা শিপন জানান, গত ৫ আগস্ট থেকে নয়ন তাকে বারবার হুমকি দিচ্ছেন এবং টাকা না দিলে হত্যার হুমকিসহ বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছেন। পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে তিনি শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশিদকে।
অভিযুক্ত যুবদল নেতার প্রতিক্রিয়া
অডিও ভাইরালের বিষয়ে আনোয়ার হোসেন নয়ন বলেন—
“এই ব্যক্তি আমাকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তার কাছে আমার আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা পাওনা আছে, তাই এক লাখ টাকা চাইছিলাম। কথোপকথনটা ঝগড়ায় পরিণত হয়েছে, তাই গালাগালি করেছি।”
তবে নয়ন এটাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন এবং বলছেন, “আমার বিরুদ্ধে কাটছাঁট করা অডিও ছড়ানো হয়েছে। আমি উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী, তাই কেউ আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি আইনি ব্যবস্থা নেব।”
যুবদল ও বিএনপির প্রতিক্রিয়া
জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন বলেন—
“বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। টাকা দাবি করা অন্যায়, তবে দলের কিছু নেতার জন্য আমরা এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।”
অন্যদিকে, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদ জানান—
“দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব বিষয়ে কঠোর অবস্থানে আছেন। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”