close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

যু ক্তরা ষ্ট্র ই রা নে হা ম লা করলে খুশি হবে চীন ও রা শি য়া’

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্য সংকটে নতুন মোড়! অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ বিশ্লেষকের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানে সামরিক হামলা চালায়, তাহলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে চীন ও রাশিয়া। কেন এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র আমেরিকার সম্ভাব্..

যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানে সামরিক অভিযান চালায়, তাহলে চীন ও রাশিয়ার কপালে হাসি ফুটবে— এমন মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক খ্যাতনামা বিশ্লেষক আলাম সালেহ। অস্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এই অধ্যাপক সম্প্রতি আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এমন যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি দুর্ভোগের কারণ, আর তাতে পরোক্ষভাবে লাভবান হবে এশিয়ার দুই পরাশক্তি।

সালেহের ভাষায়, "যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানে সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে সেটা হবে চীন ও রাশিয়ার জন্য আশীর্বাদের মতো। তারা বহুদিন ধরেই চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো জটিল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক যা তাদের সম্পদ, মনোযোগ ও সামরিক শক্তিকে দীর্ঘ মেয়াদে আটকে রাখবে।"

ইরান— কেবল আরেকটি মধ্যপ্রাচ্য নয়:
বিশেষজ্ঞ সালেহ মনে করেন, ইরানকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী কিংবা আফগান তালেবানের সঙ্গে তুলনা করাটা একেবারেই ভ্রান্ত হবে। “ইরান একটি সুসংগঠিত রাষ্ট্র, যাদের সামরিক শক্তি, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং আঞ্চলিক প্রভাব অনেক বেশি। সিরিয়া কিংবা ইরাকের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে এদের মিল নেই।

এই ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে, যুক্তরাষ্ট্র শুধুমাত্র ইরানের শক্তিশালী প্রতিরোধ নয়, বরং তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা বৈশ্বিক কৌশলগত খেলোয়াড়দের চতুর সহায়তার মুখোমুখি হবে। সালেহের মতে, “চীন ও রাশিয়া হয়তো সরাসরি সেনা পাঠাবে না, তবে তারা নিশ্চিতভাবেই কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সমর্থনের মাধ্যমে ইরানকে টিকিয়ে রাখবে।

চীন ও রাশিয়ার ভূমিকা কী হতে পারে— এ প্রশ্নের উত্তরে সালেহ জানান, দুই পরাশক্তিই ‘ছায়াযুদ্ধের’ মতো কৌশল নেবে। সরাসরি যুদ্ধে অংশ না নিয়ে, তারা অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত এবং রাজনৈতিক সহায়তার মাধ্যমে ইরানকে টিকে থাকতে সহায়তা করবে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রকে বহু বছর মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক জটিলতায় আটকে থাকতে হবে।

বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, “চীন মূলত নিশ্চিত করতে চাইবে যে ইরানের তেল রপ্তানি বন্ধ না হয় এবং আঞ্চলিক বানিজ্যিক প্রবাহ বিঘ্নিত না হয়। কারণ ইরান হলো চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (BRI) একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অন্যদিকে রাশিয়া চাইবে, পশ্চিমাদের মনোযোগ ইউক্রেন থেকে সরে গিয়ে আবারও মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঘুরে যাক।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানে হামলা করে বসে, তাহলে কেবল ইরান নয়— গোটা মধ্যপ্রাচ্য জ্বলে উঠবে এক অস্থিরতার আগুনে। আর এই অস্থিরতার সুযোগ নিতে দ্বিধা করবে না চীন ও রাশিয়া। “এটি একটি কৌশলগত ফাঁদ হয়ে উঠতে পারে আমেরিকার জন্য, যেখানে তারা নিজেরাই নিজেদের দুর্বল করে তুলবে,” বলেন সালেহ।

যুদ্ধ শুরু হলে ইউরোপীয় মিত্ররাও চাপে পড়বে। জ্বালানি সংকট, শরণার্থী সমস্যা ও রাজনৈতিক বিভাজন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য হবে বড় ধাক্কা, যেটির প্রত্যক্ষ সুবিধাভোগী হবে চীন-রাশিয়া জোট।

বিশ্ব রাজনীতির দাবা খেলায় এখন ইরান এক গুরুত্বপূর্ণ ঘুঁটি। যুক্তরাষ্ট্র যদি ভুল পদক্ষেপ নেয় এবং সামরিক আগ্রাসন চালায়, তাহলে সেটি শুধু ইরান নয়— গোটা অঞ্চলের এবং নিজের ভবিষ্যতের ওপরও বড় প্রভাব ফেলবে। আলাম সালেহের মত অনুসারে, এই সিদ্ধান্তই চীন ও রাশিয়ার মতো প্রতিপক্ষদের হাতে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতা তুলে দিতে পারে।

没有找到评论