close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

যু ক্ত রা ষ্ট্র-ই স রা য়ে লে র হু ম কি উপেক্ষা করে পরমাণু পথে অনড় ই রা ন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল হামলার মুখেও থেমে যাচ্ছে না ইরানের পরমাণু কর্মসূচি। এনপিটি ছাড়ার সম্ভাবনাও উঁকি দিচ্ছে। আরাঘচি বললেন, এই প্রযুক্তি আমাদের রক্ত-ঘামে অর্জিত।..

 

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ধারাবাহিক হুমকি ও সামরিক হামলার মধ্যেও নিজেদের পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি স্পষ্ট করে বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি যেকোনো মূল্যে অব্যাহত থাকবে এবং ইরান এই কর্মসূচি থেকে একচুলও পিছিয়ে আসবে না।

লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম 'নিউ এরাব'কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে আব্বাস আরাঘচি বলেন, "পরমাণু প্রযুক্তি হচ্ছে আমাদের জাতীয় অর্জন। এর পেছনে রয়েছে আমাদের বিজ্ঞানীদের ত্যাগ, আত্মদান এবং রক্ত-ঘাম। আমরা এটা কোনোভাবেই ত্যাগ করব না।

তিনি বলেন, যেকোনো বৈশ্বিক চাপ, নিষেধাজ্ঞা বা সামরিক হামলার মুখেও আমাদের পদক্ষেপ অপরিবর্তিত থাকবে। আমাদের জনগণ জানে—এই কর্মসূচি শুধু প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাতীয় মর্যাদার প্রতীক।

তেহরানের রাজনৈতিক ও একাডেমিক মহলে এ বিষয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও এখন খোলাখুলিভাবেই উঠছে এনপিটি (NPT) চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ফোয়াদ ইজাদি বলেন, “যেহেতু আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (IAEA) অধীনে থাকা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকেও হামলার শিকার হতে হচ্ছে, সেহেতু এনপিটির আওতায় থাকার কোনো যুক্তি নেই।”

তিনি আরও বলেন, এই চুক্তি স্বাক্ষরের মূল উদ্দেশ্য ছিল—পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু ইসরায়েলের হামলায় স্পষ্টভাবে দেখা গেছে, সেটি মানা হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ইরান পার্লামেন্টের বহু সদস্য এখন এনপিটি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি ইরান সত্যিই এনপিটি থেকে বেরিয়ে যায়, তবে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার মাত্রা আরও বেড়ে যাবে। এতে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে নয়, বরং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কেও চরম অবনতি ঘটতে পারে।

তবে ইরানের পররাষ্ট্র দপ্তর এই বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি। যদিও আব্বাস আরাঘচির বক্তব্যে স্পষ্ট, তেহরান আন্তর্জাতিক চাপে আর মাথা নত করতে প্রস্তুত নয়।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বরাবরই দাবি করে এসেছে যে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। যদিও ইরান শুরু থেকেই বলে আসছে—তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
আব্বাস আরাঘচিও এই সাক্ষাৎকারে বলেন, আমাদের প্রযুক্তি একমাত্র জ্বালানি, চিকিৎসা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের নীতি ও ধর্ম—উভয়ই পরমাণু অস্ত্রের বিরোধী।

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্ব নতুন নয়। তবে এবারের মতবিরোধের জায়গাটা আগের চেয়ে অনেক বেশি সংকটজনক। পরমাণু কর্মসূচিকে ঘিরে যদি ইরান সত্যিই এনপিটি ছাড়ে, তবে তা হবে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিসরে এক নতুন উত্তপ্ত অধ্যায়ের সূচনা।
বিশেষ করে যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ চলছে, তখন ইরানের এই অবস্থান গোটা অঞ্চলকেই আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator