close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

যু;দ্ধা;প;রা;ধের বিচার নয়, ছিল ‘রাজনৈতিক হ;ত্যা;কা;ণ্ড’! প্রতিটি বিচারককে জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি ইলিয়াস হোসেনের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আলোচিত প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে দাবি করেছেন—এটি ছিল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। তিনি বিচারপ্রক্রিয়ায় জড়িত বিচারকদের আইন আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন, যা নতুন ..

আলোচিত  প্রবাসী সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইলিয়াস হোসেন সম্প্রতি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে একটি মন্তব্য করে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন। তার দাবি অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে যেসব যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে, তা ছিল আদতে একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের নামান্তর। তিনি সরাসরি বিচারকেদের দায়ী করে বলেন—তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা উচিত।

ফেসবুক পোস্টে ইলিয়াস হোসেন লেখেন, “যু’দ্ধাপরাধের বিচারের নামে হ’ত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রতিটা বিচারককে আইনের আওতায় আনা হোক।” এই বক্তব্যে তিনি স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার মতে, বিচারকরা রাজনৈতিক প্রভাব ও সরকারের নির্দেশে কাজ করেছেন, যা বিচারিক স্বাধীনতার পরিপন্থী।

বিচার না রাজনীতি?

ইলিয়াস হোসেনের বক্তব্য এমন এক সময় সামনে এসেছে, যখন বাংলাদেশে আবারও রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। বিভিন্ন মহলে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে একাংশের প্রশংসা থাকলেও, সমালোচকদের দাবি—এই বিচার ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার। ইলিয়াস হোসেন সেই বিতর্ককে আরও উসকে দিয়ে বলেন, “এই বিচার আসলে ছিল একটি স্টেট স্পন্সরড হত্যাকাণ্ড। বিচারকেরা রাজনৈতিক চাপের সামনে মাথা নত করে এই কাজে অংশ নিয়েছেন।”

তিনি আরও দাবি করেন, এই বিচারপ্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করেনি এবং এতে নিরপেক্ষতা অনুপস্থিত ছিল। তার ভাষায়, "এটি ছিল সরকারের একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ, যেখানে পূর্ব নির্ধারিত রায় বাস্তবায়ন করতে বিচারপতিরা ভূমিকা রেখেছেন।"

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পটভূমি

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT) গঠিত হয় ২০১০ সালে। এই ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। আওয়ামী লীগ সরকার এই বিচারকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করলেও, শুরু থেকেই বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল এ বিচার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বিভিন্ন সংস্থা এই বিচারকে পক্ষপাতদুষ্ট, রাজনৈতিক প্রভাবিত এবং স্বচ্ছতা ও প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে সমালোচনা করেছে। এমনকি ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের কিছু রায়ও পরবর্তীতে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

ইলিয়াস হোসেনের মন্তব্য যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। সমর্থকরা এটিকে ‘সত্যের উচ্চারণ’ বললেও, বিরোধীরা একে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য হিসেবে অভিহিত করছেন।

অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এমন বক্তব্য বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা ও অতীত ইতিহাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। অন্যদিকে, ইলিয়াস হোসেনের সমর্থকদের দাবি—যদি এই বিচার প্রক্রিয়া সত্যিই পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে থাকে, তবে যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।

ইলিয়াস হোসেনের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে দেশের কিছু রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধ বিচার ব্যবস্থার একটি স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ পর্যালোচনার দাবি উঠতে শুরু করেছে। তারা মনে করছেন, একটি আন্তর্জাতিক পর্যালোচনা কমিশনের মাধ্যমে পুরো বিচার প্রক্রিয়াটি খতিয়ে দেখা উচিত, যাতে সত্য উদঘাটিত হয়।

ইলিয়াস হোসেনের বক্তব্য হয়তো অনেকের কাছে বিতর্কিত মনে হতে পারে, কিন্তু এটি একটি বড় প্রশ্ন তুলেছে—বিচার কতটা নিরপেক্ষ ছিল? যুদ্ধাপরাধের নামে যদি কোথাও অন্যায় হয়ে থাকে, তবে সত্য উদঘাটন ও জবাবদিহির দাবিও অমূলক নয়। এখন দেখার বিষয়, এই মন্তব্যে সরকার ও বিচার বিভাগ কী প্রতিক্রিয়া জানায়, এবং এ নিয়ে ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

コメントがありません