close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

যু দ্ধ বিরতির পরেও চাপা বি স্ফো রণ, পা র মা ণ বিক ইস্যুতে ফের উত্তেজনা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে ফের উত্তেজনা। পারমাণবিক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান বৈঠক আসছে। আইএইএ নিষিদ্ধের পথে তেহরান। সব নজর এখন হাই-ভোল্টেজ আলোচনার দিকে।..

মধ্যপ্রাচ্য যেন সদা অশান্ত আগ্নেয়গিরির নাম। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার ভয়াবহ ১২ দিনের সংঘাতের পর আপাতদৃষ্টিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, প্রকৃতপক্ষে সংঘর্ষের আগুন এখনো নিভেনি—শুধু যেন ছাইয়ের নিচে অস্থির আগুন।
এই মুহূর্তে দুই দেশের সামরিক তৎপরতা থেমে থাকলেও পারমাণবিক কর্মসূচি ও আন্তর্জাতিক কূটনীতির অঙ্গনে চলছে হাই-ভোল্টেজ উত্তেজনা।

ইসরায়েল ও ইরান যখন একে অপরকে বিমান হামলা ও ড্রোন আক্রমণে ক্ষত-বিক্ষত করছিল, তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ক্রমাগত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়। অবশেষে উভয় পক্ষ সাময়িকভাবে হামলা বন্ধে সম্মত হয়।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এ যুদ্ধবিরতি কাঁচের মতো ভঙ্গুর। সামান্য উত্তেজনাতেই ভেঙে যেতে পারে এই শান্তি। কারণ, যুদ্ধ থামলেও আস্থার সংকট রয়েই গেছে। আর সেটাই সামনে আনছে নতুন সংঘর্ষের সম্ভাবনা।

এই পারমাণবিক অস্থিরতার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এই আলোচনার প্রধান এজেন্ডা হবে—ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি। ট্রাম্প দাবি করেছেন, “আমাদের সর্বশেষ বিমান হামলায় ইরানের বেশিরভাগ পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। এ কারণেই তারা আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে।”

ট্রাম্প প্রশাসনের এই বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ সায় দিলেও, অন্য গোয়েন্দা সংস্থা ডিআইএ ভিন্ন মত পোষণ করেছে।
সিআইএ’র পরিচালক জন র‍্যাটক্লিফ বলেছেন, “আমাদের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে যে ইরানের একাধিক পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। সেগুলো পুনর্গঠন করতে বহু বছর সময় লাগবে।”
কিন্তু ডিআইএ’র ফাঁস হওয়া এক রিপোর্ট বলছে, এই ক্ষয়ক্ষতি খুবই সীমিত—মাত্র কয়েক সপ্তাহ বা মাসের বিলম্ব ঘটাবে ইরানের কর্মসূচিকে।
এই বিভ্রান্তির মধ্যেই ইসরায়েল নিজস্ব গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দাবি করেছে, “ইরানের সক্ষমতা কয়েক বছর পিছিয়ে গেছে।” এই তথ্যযুদ্ধ আবারও পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক করে তুলেছে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় এসেছে তেহরানের সংসদ থেকে। সেখানে পাস হয়েছে একটি বিতর্কিত বিল, যাতে বলা হয়েছে—জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা IAEA-র সঙ্গে সমস্ত সহযোগিতা স্থগিত করা হবে।
এখন শুধু ‘গার্ডিয়ান কাউন্সিল’-এর অনুমোদন বাকি। অনুমোদন পেলে ভবিষ্যতে IAEA আর ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় পরিদর্শন চালাতে পারবে না—যতক্ষণ না দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সেটা অনুমতি দেয়।
এমন সিদ্ধান্ত কূটনৈতিক অঙ্গনে ইরানকে আরও একঘরে করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পর্যবেক্ষকরা।

সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন—আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যে বৈঠক হতে যাচ্ছে, তা কি উত্তেজনা কমাবে, না উল্টোভাবে আবারও সংঘাতের আগুন জ্বালিয়ে দেবে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আলোচনার ফলই নির্ধারণ করবে মধ্যপ্রাচ্যের পরবর্তী গতি-প্রকৃতি। যুদ্ধবিরতি এখন শুধু কূটনীতির পাতায় লেখা একটি শব্দ—যেটি বাস্তবে কতটা টিকবে, সেটিই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

没有找到评论