ইরানের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তারা এই বিষয় নিয়ে কোনো প্রকাশ্য বক্তব্য না দেন। মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে ইসরায়েলের হোম ফ্রন্ট কমান্ডের বরাতে আলজাজিরা এই তথ্য প্রকাশ করে।
নেতানিয়াহুর নির্দেশনা আসে সরকারের শীর্ষ নিরাপত্তা কমিটির এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর। এতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোন ধরনের স্পষ্ট বক্তব্য বা ঘোষণা দেওয়া এ সময়ে যথার্থ নয়, কারণ পরিস্থিতি এখনো পর্যবেক্ষণাধীন।
হোম ফ্রন্ট কমান্ড জানিয়েছে, সামরিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। জনগণকে আগের নির্দেশনাবলী মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নানা রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও, ইসরায়েল সরকার এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কথা জানিয়েছিলেন, তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি।
সরকারি সূত্রের মতে, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনো ইসরায়েল সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তারপর সিদ্ধান্ত নেবে।
যদিও যুদ্ধবিরতি নিয়ে শঙ্কা ও আলোচনা চলছে, হোম ফ্রন্ট কমান্ড জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য কিছু এলাকায় বিধিনিষেধ বজায় রাখার ঘোষণা দিয়েছে। জনসমাগম ও অন্যান্য কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতা চলবে।
সেনাবাহিনী ও সরকারের নির্দেশনা মেনে চলতে জনগণকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে কোনও প্রকার ঝুঁকি এড়ানো যায় এবং নিরাপত্তা বজায় রাখা যায়।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরও ইরাকের ইমাম আলী ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কঠোর নির্দেশনার পেছনে সম্ভবত রয়েছে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি। সরকারি কর্মকর্তাদের মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে তিনি চাচ্ছেন, তথ্যের ভুল ব্যাখ্যা ও পরিস্থিতির অবান্তর রাজনৈতিকীকরণ এড়ানো হোক।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনও অবিচলিত থাকলেও, মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি শান্তি প্রতিষ্ঠায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে যুদ্ধবিরতির যে কোনো প্রক্রিয়া কতটা সফল হবে, তা সময়ই বলে দেবে।