close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

যু'দ্ধ'বি'মান হারানোর সত্যতা স্বীকার করল ভারত: চারদিনের সংঘর্ষে পর্দা উঠল গোপন সত্যের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মে মাসের চারদিনের ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করলেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান। কেন হারালো? পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা ছিল কি? উঠে এলো চাঞ্চল..

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলতি বছরের মে মাসে ঘটে যাওয়া চারদিনের সীমান্ত সংঘর্ষ নিয়ে এক বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (CDS) জেনারেল অনিল চৌহান।
প্রথমবারের মতো তিনি নিশ্চিত করেছেন, এই সংঘর্ষে ভারতের বেশ কিছু যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে। তবে তিনি জোর দিয়ে জানিয়েছেন, এই ঘটনা কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে যায়নি।

সংঘর্ষ ও যুদ্ধবিমান হারানোর স্বীকারোক্তি

শনিবার সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা সম্মেলন ‘শাংরি-লা ডায়ালগ’-এ ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল চৌহান এ তথ্য প্রকাশ করেন।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়া অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, কীভাবে সেগুলো ভূপাতিত হলো এবং এর পেছনের কৌশলগত ব্যর্থতা।”

পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে তিনটি রাফাল, একটি মিগ-২৯, একটি এসইউ-৩০ এবং একটি অজানা মডেল।
তবে এই দাবিকে “একেবারেই ভুল” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন চৌহান। তিনি বলেন, “সংখ্যাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং গুরুত্বপূর্ণ হলো কী ভুল হয়েছে এবং কীভাবে তা সংশোধন করা হয়েছে।”

ভুল সংশোধন করে আবারো পাল্টা আঘাত

চৌহান দাবি করেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী কৌশলগত সেই ভুল চিহ্নিত করে দ্রুত সংশোধন করে নেয় এবং সংঘর্ষের দুইদিনের মধ্যেই পুনরায় অভিযান চালিয়ে দূর পাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানে।

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সব যুদ্ধবিমান আবার উড়িয়েছি এবং তারা সফলভাবে টার্গেট হিট করেছে। এটা আমাদের সামরিক সক্ষমতার একটি বড় পরীক্ষা ছিল, এবং আমরা তা উতরে গেছি।”

পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে ব্যাখ্যা

ব্লুমবার্গের পক্ষ থেকে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের “মধ্যস্থতা” সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হলে, চৌহান সরাসরি উত্তর দেননি। তবে তিনি বলেন, “আমি মনে করি প্রচলিত যুদ্ধ ও পারমাণবিক যুদ্ধ এক জিনিস নয়। পাকিস্তানের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ চ্যানেল খোলা ছিল, এবং দুই পক্ষই এই সীমারেখা অতিক্রম করেনি।”

চীনের প্রযুক্তি ব্যর্থ বলছে ভারত

পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা প্রসঙ্গে জেনারেল চৌহান উল্লেখ করেন, পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে যেসব প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছে, তার বাস্তব কোনো কার্যকারিতা দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, “চীনের অস্ত্র এবং প্রযুক্তি তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করেনি। এটি আমাদের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।”

সংঘর্ষের পটভূমি

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৭ মে কাশ্মীরের একটি শহরে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় চারদিনব্যাপী সীমান্ত সংঘর্ষ, যা কাশ্মীর, রাজস্থান এবং পাঞ্জাব সীমান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জবাবে তারা উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিশোধ নিয়েছে এবং ভারতের ছয়টি আধুনিক যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে।
ভারতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ না করা হলেও চৌহানের এই স্বীকারোক্তিতে স্পষ্ট যে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর কিছু ক্ষতি হয়েছে।

ভবিষ্যতের হুমকি ও রেড লাইন

সংঘর্ষ আপাতত বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চৌহান। তবে তিনি স্পষ্টভাবে সতর্ক করেন, “আমরা আমাদের রেড লাইন ঠিক করে দিয়েছি। ভবিষ্যতে সংঘর্ষ হবে কি না, তা পাকিস্তানের আচরণের ওপর নির্ভর করবে।”

চারদিনের ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ নিয়ে এতদিন যা গুজব ছিল, জেনারেল চৌহানের বক্তব্যে তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে। যুদ্ধবিমান হারানোর স্বীকারোক্তি, কৌশলগত ভুল স্বীকার এবং তা সংশোধনের মতো বিষয়গুলো ভারতের সামরিক স্বচ্ছতার একটি নিদর্শন। তবে একইসঙ্গে এটি পাকিস্তানের প্রতি কঠিন বার্তাও—পরবর্তী সংঘর্ষে প্রস্তুত ভারত অনেক বেশি সাবধান ও আক্রমণাত্মক হবে।

Nenhum comentário encontrado


News Card Generator