close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

জরুরি বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সরকারবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল রাজধানীসহ সারাদেশ, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে চলছে বিক্ষোভ—এমন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে যমুনা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে জরুরি বৈঠকে বসেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পর..

রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও অবরোধ। ঠিক এমন এক সংকটময় মুহূর্তে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ এক জরুরি বৈঠকে বসেছে।

শনিবার (১০ মে) রাত সাড়ে ৮টার কিছু পরে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক শুরু হয়। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিকে কেন্দ্র করে গঠিত চলমান উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা করতেই এই বৈঠকের আয়োজন।

বিশ্বব্যাপী নোবেলজয়ী হিসেবে পরিচিত ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে তাঁর ওপর বড় দায়িত্ব বর্তেছে। এ অবস্থায় তাঁর নেতৃত্বেই উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে এই বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, এ বৈঠকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিক্ষোভে জনসাধারণের অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান নিয়ে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিকে কেন্দ্র করে যেসব রাজনৈতিক দল ও সংগঠন মাঠে সক্রিয়, তাদের দাবিকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়েই আলোচনা চলছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বক্তৃতায় বলেন, “বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে আর দেখতে চায় না।” তিনি দাবি করেন, সরকার জনগণের আস্থা হারিয়েছে এবং এখন তাদের অবস্থান অবৈধ।

একইসঙ্গে বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন, যদি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসে, তাহলে “মার্চ টু যমুনা” কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। অর্থাৎ সরাসরি যমুনা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হবে। এই ঘোষণা রাজনৈতিক উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

সরকারবিরোধী এই দাবিগুলোর প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার আশঙ্কায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠক শুধু পরিস্থিতি পর্যালোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না—বরং তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের সম্ভাবনাও রয়েছে। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপের আয়োজন, নির্বাচনকালীন সরকার কাঠামো পুনর্বিন্যাস এবং গণআন্দোলনের চাপে সরকার পরিচালনার রূপরেখা নির্ধারণের ব্যাপারেও আলোচনা হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক দেশের জন্য একটি মোড় ঘোরানোর মুহূর্ত হতে পারে। কারণ, একদিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের চাপ, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের প্রতি জনগণের আস্থা সংকট—এই দুইয়ের মাঝে নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, বৈঠক চলমান রয়েছে এবং উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

نظری یافت نشد