close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
অন্তর্বর্তী সরকার জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রশাসনিক বিপ্লবের পথে বাংলাদেশ—সব মন্ত্রণালয় পাচ্ছে সময়সীমা। ক..

অন্তর্বর্তী সরকারের দৃঢ় সংকল্পে নতুন করে উন্মোচিত হলো জনপ্রশাসনে পরিবর্তনের দরজা। জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত প্রশাসনিক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো এখন আর কেবল কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থাকছে না—ত্বরিত বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এক যুগান্তকারী প্রশাসনিক পদক্ষেপ হিসেবে এই সিদ্ধান্তকে দেখা হচ্ছে ‘নতুন বাংলাদেশের রূপকার’ হিসেবে।

প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে শনিবার (২১ জুন) জানানো হয়েছে, গত ১৬ জুন তাঁর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি জরুরি বৈঠকে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো দ্রুত কার্যকর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

সভায় স্পষ্টভাবে জানানো হয়, অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই যে দায়িত্ব পেয়েছে, তা পূরণে কোনো ধরনের বিলম্ব মেনে নেওয়া হবে না। যে ছয়টি প্রধান সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে, তাদের মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন, প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়গুলো নিজেদের উদ্যোগে যে সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে, সেগুলো আর দেরি না করে দ্রুত বাস্তবায়নে এগিয়ে যেতে হবে।

এলক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন তারা নাগরিক প্ল্যাটফর্মে সরকারের সব সেবা একত্রে অন্তর্ভুক্ত করার একটি সময়সীমাবদ্ধ রোডম্যাপ তৈরি করে এবং বাস্তবায়নে এগিয়ে যায়।

যদিও সংবিধান সংশ্লিষ্ট এবং বড় পরিসরের সংস্কারগুলো এখনই বাস্তবায়ন হচ্ছে না, তবুও তার জন্যও কাজ থেমে নেই। এসব বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি “জাতীয় ঐকমত্য কমিশন” কাজ করছে। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে নেওয়া হচ্ছে অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত।

এই ঐকমত্য-নির্ভর প্রক্রিয়ার পাশাপাশি সরকার প্রশাসনিক খাতের ছোট ও মধ্যম মানের সুপারিশগুলোকে এখনই কার্যকর করতে চায়, যাতে দ্রুত পরিবর্তনের প্রভাব মাঠপর্যায়ে টের পাওয়া যায়।

প্রকাশিত পোস্টারে উল্লেখ করা হয়, আগামী এক মাসের মধ্যে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাদের নিজ নিজ সংস্কার পরিকল্পনার একটি সময়সীমাবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। এতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সরকার এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় সময়ক্ষেপণ একেবারেই সহ্য করতে রাজি নয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগ শুধু কাগজে নয়, বাস্তবে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। অতীতে বহুবার প্রশাসনিক সংস্কারের প্রস্তাব এলেও তা বাস্তবায়নের আগেই হারিয়ে গেছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায়। কিন্তু এই সরকার তার জন্মসূত্রেই গণদাবির প্রতিফলন হওয়ায়, জনপ্রশাসনকে গণমুখী করতে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তথ্য প্রযুক্তি এবং গভর্নেন্সের একীভূত ব্যবস্থাপনায় যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে নাগরিকদের সেবা গ্রহণ প্রক্রিয়া হবে স্বচ্ছ, দ্রুত এবং জবাবদিহিমূলক।

সংস্কারের নামে বছরের পর বছর যে থেমে থাকা ছিল, এবার তা শেষ হওয়ার পথে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের এই সিদ্ধান্ত যে শুধু প্রশাসনিক খাতকেই নয়, বরং গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে নতুন কাঠামোতে নিয়ে আসবে—তা বলাই বাহুল্য।

এই পরিবর্তন শুধু কাগজে নয়, বাস্তবে কতটা প্রভাব ফেলে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে সরকার যে এবার পিছিয়ে নয়, বরং এক ধাপে এগিয়ে—তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

Inga kommentarer hittades