🌟 জিলহজ্ব মাসের ১১-১৩ তারিখ (আয়্যামুত তাশরীক) ও পরবর্তী সময়ের ফজিলত ও বিধান
লেখক: মাওলানা ওবায়দুল্লাহ আল মাহমুদী (কাশিয়ানী)
১. আয়্যামুত তাশরীক (১১, ১২, ১৩ জিলহজ্ব)
🔹 এই তিন দিন কুরআনে "স্মরণ ও খাওয়া-দাওয়ার" দিন হিসেবে পরিচিত।
কুরআন:
> "وَاذْكُرُوا اللَّهَ فِي أَيَّامٍ مَّعْدُودَاتٍ"
“এই গণনাযোগ্য দিনগুলোতে তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করো।”
— সূরা বাকারা: ২:২০৩
🔸 তাফসির অনুযায়ী “আয়্যামুন মা'দুদাত” = ১১, ১২, ১৩ জিলহজ্ব।
---
২. তাকবীর তাশরীক বলা ফরজ সালাতের পরে (১১-১৩ জিলহজ্ব)
🔹 পুরুষদের জন্য জোরে, মহিলাদের জন্য আস্তে বলা সুন্নত।
📜 তাকবীর তাশরীক:
> اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، وَلِلَّهِ الْحَمْدُ
🔸 সময়কাল: ফজরের নামাজ (৯ জিলহজ্ব) থেকে শুরু করে আসরের নামাজ (১৩ জিলহজ্ব) পর্যন্ত — মোট ২৩ ওয়াক্ত।
হাদিস:
> “তোমরা এই দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করো...”
— সহিহ বুখারি: ৯৭০ (ইবনে আব্বাস রা.)
---
৩. কুরবানির সময়সীমা
🔸 কুরবানির সময় ১০ জিলহজ্ব ফজর থেকে শুরু করে ১২ জিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
তবে অনেক ইমামের মতে ১৩ জিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত কুরবানি করা জায়েয।
হাদিস:
> “এই দিনগুলোতে কুরবানির কাজ করো এবং খাও, খাওয়াও।”
— তিরমিজি: ১৫১৮
---
৪. হজ পালনকারীদের জন্য করণীয়
জমারায় রমী (পাথর নিক্ষেপ):
১১, ১২ ও ১৩ তারিখে তিনটি জামারায় পাথর মারা হজের রুকন।
মিনা ত্যাগ:
১২ জিলহজ্বে কেউ চাইলে ফিরে যেতে পারে (আল-নাফর আল-আউয়াল), তবে ১৩ তারিখে থাকলে আরও পাথর নিক্ষেপ করতে হয়।
---
❌ বর্জনীয় বিষয়সমূহ (১১-১৩ জিলহজ্ব)
1. রোযা রাখা নিষিদ্ধ
🔹 হাদিসে এসেছে:
> “তাশরীকের দিনগুলো হচ্ছে, খাওয়া-দাওয়া ও আল্লাহর জিকিরের দিন।”
— সহিহ মুসলিম: ১১৪১
2. তাকবীর তাশরীক না বলা
🔹 ফরজ সালাতের পর এই তাকবীর বলা সুন্নতে মুয়াক্কাদা; ছেড়ে দেওয়া গোনাহের শামিল হতে পারে।
3. গাফেলতা ও দুনিয়াবি ব্যস্ততায় মগ্ন হওয়া
🔹 এই সময় ইবাদত ও জিকিরের সময়; গাফেলতা অপ্রত্যাশিত।
---
🕌 ১৩ জিলহজ্ব পরবর্তী সময় (১৪-৩০ জিলহজ্ব)
জিলহজ্ব মাসের বাকি দিনগুলোতে ইসলামে নির্দিষ্ট কোনো আমল নির্ধারিত নেই, তবে সাধারণ নেক আমল চালিয়ে যাওয়া, যেমন:
পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাআতে আদায়
কোরআন তিলাওয়াত
দান-সদকা
নফল রোযা (তবে ১৩ জিলহজ্ব পর্যন্ত রোযা নিষিদ্ধ)
গুনাহ থেকে বিরত থাকা
---
📚 রেফারেন্স সারসংক্ষেপ:
কুরআন:
সূরা বাকারা: ২:২০৩
সূরা কাওসার: ১০৮:২
হাদিস:
সহিহ বুখারি: ৯৭০
সহিহ মুসলিম: ১১৪১
তিরমিজি: ১৫১৮