জিয়ার সৈনিক চাঁদা তুলে দৈনিক মিছিল

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Students are allegedly being pushed into protests with money collected by supporters of Ziaur Rahman's ideology, sparking public criticism and raising questions over political ethics.

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করা হচ্ছে—চাঁদা তুলে বিক্ষোভে নামানোর অভিযোগ উঠেছে জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী একদল নেতার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে উত্তপ্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

 

রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের উঠেছে বিতর্ক। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে—এই মিছিল কি আদৌ স্বতঃস্ফূর্ত ছিল? নাকি এর পেছনে রয়েছে পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রভাব ও অর্থায়ন?

বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা গেছে, জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী একটি সংগঠন নিয়মিতভাবে 'চাঁদা' সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীদেরকে মিছিল-মিটিংয়ে নামাতে উৎসাহিত করছে। ‘শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের আড়ালে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের উদ্দেশ্য’—এমনটাই বলছে বিশ্লেষক মহল।

ঢাকার একাধিক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি, তারা বুঝেই বা না বুঝেই মিছিলে অংশ নিচ্ছে। একজন ছাত্রনেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমাদের বলা হয় এটা জাতির স্বার্থে, অথচ পরে দেখা যায় রাজনৈতিক গেইম খেলা হচ্ছে।” এ ধরনের অভিযোগ শুধু এবার নয়, বিগত কয়েক বছর ধরেই উঠে আসছে।

এমনকি একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে—নেতা-কর্মীরা সরাসরি ছাত্রদের মিছিলে যেতে অনুরোধ করছে এবং কেউ কেউ অর্থ দেওয়ার কথাও বলছে। এসব ঘটনা জনমনে সন্দেহ আরও বাড়িয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও শিক্ষাবিদরা বলছেন, রাজনীতিতে ছাত্রদের ভূমিকা ঐতিহাসিক হলেও তা যেন কখনোই ভাড়াটে বাহিনীতে পরিণত না হয়। গণতন্ত্রে মতপ্রকাশের অধিকার থাকলেও, টাকার বিনিময়ে আন্দোলনে নামানো এক ধরণের নৈতিক অপরাধ।

বিশিষ্ট রাজনৈতিক ভাষ্যকার আমিনুল হক বলেন, এই পদ্ধতিটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। এতে করে ছাত্রসমাজ বিভ্রান্ত হয় এবং প্রকৃত গণদাবি চাপা পড়ে যায়।” তিনি আরও বলেন, “যদি আদর্শের ভিত্তিতে আন্দোলন হয়, সেটা যৌক্তিক। কিন্তু কেউ যদি টাকা দিয়ে মাঠে নামায়, তবে সেটা রাজনৈতিক ভাড়াটে সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি।

এদিকে বিএনপি সংশ্লিষ্ট একাধিক মহল এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, ছাত্ররা নিজ উদ্যোগেই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে। তবে যেহেতু বারবার একই অভিযোগ উঠছে, তাই সরকারের তদন্ত সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা শুরু হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে সাধারণ অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যারা খেলার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

সংবিধান অনুযায়ী, নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকার থাকলেও তার অপব্যবহার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকে—এটাই এখন সময়ের দাবি।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি