কাঠালিয়া ছাত্রদল সভাপতির ফেসবুক পোস্ট ঘিরে তোলপাড়; স্থানীয় ও যোগ্য প্রার্থী দেওয়ার দাবি
ঝালকাঠি: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনে বিএনপি জোটের সম্ভাব্য প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে চরম উত্তেজনা ও আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। গুঞ্জন উঠেছে যে, জোটের স্বার্থ রক্ষা করতে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান-কে এই আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে। এই খবরে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কর্মীদের মধ্যে গভীর হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
কাঁঠালিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম তুষার সম্প্রতি তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে এই বিষয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে একটি বিস্তারিত পোস্ট করেছেন।
ছাত্রদল সভাপতি দাবি করেন 'অপরিচিত প্রার্থীর জামানত হারানোর ইতিহাস'
রাকিবুল ইসলাম তুষার তাঁর পোস্টে স্পষ্ট করে বলেছেন, ঝালকাঠি-১ আসনে একজন 'অপরিচিত' ও 'বহিরাগত' প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে বিএনপির নিশ্চিত পরাজয় ঘটবে।
তিনি দাবি করেন, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত হলেও রাজাপুর-কাঁঠালিয়া আসনে তিনি প্রায় অপরিচিত। এলাকার সাধারণ ভোটাররা তাঁকে চেনেন না এবং তাঁর নাম শোনেননি।
পরাজয়ের আশঙ্কা: ছাত্রদল নেতার আশঙ্কা, শুধু জোটের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য ইরানকে মনোনয়ন দিলে দল নিশ্চিত জয়ের সুযোগ হারাবে। তাঁর মতে, এই আসনে ইরানের জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই।
অতীতে জামানত হারানো: পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইরান সাহেব অতীতে তাঁর নিজ নির্বাচনী আসন পিরোজপুর-২ এ অংশ নিয়ে অত্যন্ত নগণ্য ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছিলেন।
তুষার মনে করেন, মোস্তাফিজুর রহমান ইরানেরও উচিত হবে নিশ্চিত পরাজয় জেনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা থেকে বিরত থাকা এবং এই আসনে মনোনয়ন না নেওয়া।
যোগ্য ও স্থানীয় প্রার্থীর পক্ষে জোর দাবি
ছাত্রদল সভাপতি জোর দিয়ে বলেন, জোটের স্বার্থের চেয়েও আসনের জয় ছিনিয়ে আনা দলের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এই মুহূর্তে এমন একজন নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানান যিনি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং যার জেতার সক্ষমতা আছে।
"দুর্বল ও অপরিচিত প্রার্থীকে দিয়ে আসনটি 'ত্যাগ' করার চেয়ে, যোগ্য ও স্থানীয় নেতা দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে," পোস্টে মন্তব্য করেন তুষার।
রফিকুল ইসলাম জামালের প্রতি কর্মীদের পূর্ণ আস্থা
এই প্রেক্ষাপটে, পোস্টে ঝালকাঠি-১ আসনের জন্য বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল-এর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে এবং তাঁর প্রতি স্থানীয় কর্মীদের পূর্ণ আস্থার কথা তুলে ধরা হয়েছে।
সংগ্রামী ও ত্যাগী নেতা: রফিকুল ইসলাম জামালকে তিনি 'নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিক' এবং 'দৃঢ়চেতা সংগ্রামী নাম' হিসেবে উল্লেখ করেন, যিনি এক-এগারোর দুঃসময় থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে কর্মীদের পাশে ছিলেন।
নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম: ফ্যাসিস্ট সরকারের দমন-পীড়নের সময় তিনি হামলা-মামলা, কারাবরণ এবং রাজপথে রক্ত ঝরানোর মতো ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
নেতৃত্বের প্রমাণ: পোস্টে বলা হয়, সাবেক নেতা শাহজাহান ওমর যখন দলের কঠিন সময়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন, তখন রফিকুল ইসলাম জামালই ঝালকাঠি জেলার সবচেয়ে সিনিয়র ও অভিজ্ঞ নেতা হিসেবে দলের হাল ধরেন।
পোস্টটিতে দাবি করা হয়, রফিকুল ইসলাম জামাল তাঁর নিঃস্বার্থ রাজনীতি ও নিরহংকার জীবনচর্চার মাধ্যমে রাজাপুর-কাঁঠালিয়ার মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন এবং 'ধানের শীষ' প্রতীকে নিশ্চিত জয় এনে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
এই বিষয়ে স্থানীয় বিএনপির মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করছে।



















