সম্পর্কের টানাপড়েন, অভিযোগ আর কেলেঙ্কারির মাঝেই ভেঙে গেল হিরো আলম ও রিয়া মনির সংসার। তালাকের নোটিশে জানানো হয়েছে, একাধিক বিয়ে ও বনিবনা না হওয়াই বিচ্ছেদের মূল কারণ।
বাংলাদেশের আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম, যিনি সবার কাছে হিরো আলম নামে পরিচিত, এবং তার স্ত্রী রিয়া মনির দাম্পত্য জীবন শেষ পর্যন্ত ভেঙে গেল। কয়েক মাস ধরে সম্পর্কের ওঠা-নামা, ঝগড়া, সামাজিক মাধ্যমে তর্ক-বিতর্ক এবং একে অপরকে নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ ছড়ানোর পর শেষ হলো এই আলোচিত সম্পর্কের অধ্যায়।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একে অপরের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ তুলে আসছিলেন তারা। হিরো আলম সম্প্রতি অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী রিয়া মনি কক্সবাজারে প্রেমিক ম্যাক্স অভির সঙ্গে রাত কাটিয়েছেন। এই অভিযোগের জেরে হিরো আলমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেন রিয়া মনি। তিনি দাবি করেন, কেবল মৌখিকভাবে নয়, আইনিভাবেও তিনি বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
প্রথম দিকে হিরো আলম এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে অস্বীকার করেন। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে যায় যখন রিয়া মনি সংবাদমাধ্যমে তালাকের নোটিশের কপি পাঠান। গতকাল দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে পাঠানো ওই নোটিশে দেখা যায়, চলতি মাসের ৭ তারিখে তিনি স্বামী আশরাফুল হোসেন আলমকে সরকারিভাবে তালাকের নোটিশ পাঠান। নোটিশে দুটি কারণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়— এক, স্বামীর একাধিক বিয়ে; দুই, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়া।
এ বিষয়ে রিয়া মনি জানান, "তালাকের কাগজ আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকে পাঠিয়েছি। তবে আইনিভাবে প্রক্রিয়া শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে।"
অন্যদিকে, হিরো আলম তার অবস্থান থেকে সরেননি। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, "রিয়া মনি আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমি ম্যাক্স অভি এবং রিয়া মনির নামে মামলা করব। আমার স্ত্রী হয়ে সে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়েছে অভির সঙ্গে, এবং আমি তাদের হাতে-নাতে ধরেছি।"
এই নাটকীয় ঘটনার পর হিরো আলমের মানসিক অবস্থা আরও ভেঙে পড়ে। তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে জানান, আগামীকাল বুধবার বিকেল ৫টায় তার জানাজা হবে। এই পোস্টের মাধ্যমে ইঙ্গিত মেলে যে, তিনি আত্মহননের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
তবে শেষ মুহূর্তে সন্তানদের অনুরোধে এবং পরিবারের কথা ভেবে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তিনি। এক ভিডিও বার্তায় হিরো আলম জানান, সন্তানদের কান্না ও পরিবারের অনুরোধ তাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, "আমি আমার সন্তানদের জন্যই বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
হিরো আলম ও রিয়া মনির এই বিচ্ছেদ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলছে তুমুল আলোচনা। কেউ কেউ রিয়া মনির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন, আবার কেউ হিরো আলমের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছেন। একসময় যারা একে অপরের ভালোবাসার গল্প ছড়াতেন, আজ তারা দাঁড়িয়ে আছেন দুই বিপরীত মেরুতে—আইনিভাবে বিচ্ছেদের পথে।
এখন দেখার বিষয়, এই তালাক প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলে দুইজনের জীবনে কী নতুন মোড় আসে এবং তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর আইনি পরিণতি কী হয়।