close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের চুক্তি বাতিল না করলে হেফাজতের কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Hefazat-e-Islam has strongly opposed the UN human rights office in Dhaka. The group warned of strict actions if the agreement is not cancelled immediately.

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপন চুক্তির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। চুক্তি বাতিল না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘের সই হওয়া চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটির আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এবং মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান এক যুক্ত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এই চুক্তি অবিলম্বে বাতিল না হলে তারা কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন।

আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে হেফাজতের শীর্ষ নেতারা বলেন, দেশের ওলামায়ে কেরাম, ইসলামপন্থী দল ও নাগরিকদের টানা প্রতিবাদ এবং উদ্বেগ সত্ত্বেও সরকার একতরফাভাবে জাতিসংঘের সঙ্গে এই সংবেদনশীল চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। তারা বলেন, একটি অন্তর্বর্তী সরকার কোনো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত বিষয়ে জনগণের মতামত উপেক্ষা করে এককভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এটি গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় নীতিমালার লঙ্ঘন।

তারা বলেন, এই মানবাধিকার কার্যালয় মূলত যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে খোলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত নয় এবং এই মুহূর্তে এমন কোনো পরিস্থিতির মধ্যেও নেই, যাতে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খোলার প্রয়োজন পড়ে। এর পেছনে রহস্যজনক উদ্দেশ্য রয়েছে এবং এটি দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ বলেও দাবি করেন তারা।

হেফাজত নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, যদি সরকার এই চুক্তি অবিলম্বে বাতিল না করে, তবে তারা কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানাবে। তারা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, মার্কিন স্বার্থে পরিচালিত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস বাংলাদেশে হতে দেওয়া যাবে না। এটি দেশের ইসলামি চিন্তাধারার পরিপন্থী।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, অতীতে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক আইন ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর বারবার হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে। নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এ ধরনের হস্তক্ষেপের প্রমাণ রয়েছে। তারা বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার দর্শনে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের অধিকারকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়, যা বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূলনীতির পরিপন্থী।

সম্প্রতি একজন সমকামী ব্যক্তিকে জাতিসংঘ বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার খবরের প্রসঙ্গ টেনে হেফাজত নেতারা বলেন, এটি সরাসরি দেশের ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত। নারী অধিকার আন্দোলনের আড়ালে এই অপসংস্কৃতি সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা আমরা বরদাশত করব না।

তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আরও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের অফিস থাকলে সেগুলো আরও উৎসাহিত হবে এবং দেশের একতা ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।

হেফাজত নেতারা প্রশ্ন তোলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের গণসমাবেশে সংঘটিত ভয়াবহ হামলার বিষয়ে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে কেন এখনো কোনো বিবৃতি আসেনি? কেন ফ্যাসিস্ট সরকারের জঙ্গি নাটকের আড়ালে আলেম-ওলামার ওপর নির্যাতনের ঘটনায় কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি? তারা বলেন, “আমেরিকা ও ভারতের সহায়তা না থাকলে এ দেশে ইসলামী শক্তির ওপর এত দমন-পীড়ন চালানো সম্ভব হতো না। আর জাতিসংঘের অফিস থাকার পরও যদি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে সেটি থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।

তারা উল্লেখ করেন, ফিলিস্তিনে তিন দশক ধরে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস থাকলেও সেখানে কোনো মানবাধিকার রক্ষা হয়নি। বরং বর্বর দখলদারিত্ব ও গণহত্যা বেড়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তারা মনে করেন, বাংলাদেশেও জাতিসংঘের এই অফিস কেবলমাত্র দেশকে একটি নতুন সংঘর্ষে ঠেলে দেওয়ার পরিকল্পনার অংশ।

তাই তারা সরকারকে অনতিবিলম্বে এই চুক্তি বাতিল করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা ওলামায়ে কেরাম দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের পক্ষে সবসময় সোচ্চার ছিলাম এবং থাকব। এবারও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের আন্দোলন হবে আরও দৃঢ় এবং আপসহীন।

No se encontraron comentarios