close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসের কক্সবাজার সফর: রোহিঙ্গা সংকটে বিশ্ব এক গভীর সংকটের মুখে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট এখন গভীর সংকটের দ্বারপ্রান্তে। তিনি মায়ানমারের সকল পক্ষকে সংযম প্রদর্শন এবং বেসামরিক ন..

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত শুক্রবার কক্সবাজারে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, রোহিঙ্গা সংকট বিশ্বকে একটি গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই মন্তব্য তিনি যখন করেন, তখন বিশ্বমহল আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, "রোহিঙ্গাদের দৃঢ়সংকল্প আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের পরিস্থিতি শুনেছি, এবং তাদের সাহস দেখে আমি গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছি।"

গুতেরেস জানান, অনেক রোহিঙ্গা মায়ানমারে তাদের ওপর চালানো নিপীড়ন ও নির্যাতনের কথা শেয়ার করেছেন এবং তারা তাদের মাতৃভূমি, মায়ানমারে ফিরে যেতে চায়। তিনি বলেন, "নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়াই এই সংকটের মূল সমাধান," এবং বিশ্ব সম্প্রদায়কে তাদের সহায়তা করতে আরও দৃঢ় মনোভাব গ্রহণ করার আহ্বান জানান।

মায়ানমারের পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, "রাখাইন রাজ্যে সংঘাত ও পদ্ধতিগত নিপীড়ন এখনো চলছে, এবং আমরা যতদিন পর্যন্ত এটি শেষ না হবে, ততদিন আমাদের সাহায্য অব্যাহত রাখতে হবে।" তিনি মায়ানমারের সকল পক্ষকে একযোগভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসরণ করতে বলেন।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখার পর গুতেরেস আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ২০২৫ সালে মানবিক সহায়তার পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমে যেতে পারে। এ কারণে সংকট আরও ভয়াবহ হতে পারে এবং মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে। তিনি বলেন, "এখনই সময়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহায়তা প্রদান করতে হবে। আমরা যদি তা না করি, তাহলে বিপর্যয় নিশ্চিত।"

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, "এখানে মানবিক সহায়তা পরিবর্তন আনছে, কিন্তু আমরা যদি সহায়তা বন্ধ করি, তাহলে এর ভয়াবহ প্রভাব হবে।" বাংলাদেশের ভূমিকা এবং স্থানীয় জনগণের সহযোগিতাকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেন, যেহেতু তারা এই সংকটে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, "রোহিঙ্গা শরণার্থীরা তাদের সুরক্ষা, মর্যাদা এবং পরিবারের জন্য নিরাপত্তা চায়। তাদের জন্য নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আমাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।"

এর আগে, ২০১৮ সালে তার কক্সবাজার সফরের স্মৃতি স্মরণ করে গুতেরেস বলেন, সেসময় রোহিঙ্গা শিবিরের অবকাঠামোগত উন্নতি হয়েছিল, তবে এখনও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। তিনি জানান, "এখানে জলবায়ু সংকটের ঝুঁকি রয়েছে, এবং গ্রীষ্মকালে তীব্র গরম, অগ্নিকাণ্ড, ঘূর্ণিঝড় এবং বর্ষাকালে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।"

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, "এই সংকটে শুধুমাত্র খাদ্য সহায়তা নয়, শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং স্বাধীনতার সুযোগের প্রয়োজন রয়েছে।" তিনি রোহিঙ্গাদের সাহায্য পৌঁছানো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘ মহাসচিব এ সফরে ঢাকায় আসার পর কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সময় কাটান। সেখানে তিনি তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন, এবং স্থানীয় শরণার্থী শিবির ও সেন্টার পরিদর্শন করেন। তিনি এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করেন, এবং তাদের খাদ্য ও পুষ্টিসংক্রান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, "আমাদের দায়িত্ব, এই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন নিশ্চিত করা।"

সফরের শেষে, গুতেরেস বাংলাদেশের জনগণের সহানুভূতি ও সহায়তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, "এই পবিত্র রমজান মাসে, বাংলাদেশের জনগণের জন্য তাদের সহযোগিতাকে স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"

জাতিসংঘ মহাসচিব তার সফর চলাকালীন ঢাকায় আরও কর্মসূচিতে অংশ নেবেন, এবং তিনি আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে রোহিঙ্গাদের প্রতি আরও সমর্থন প্রদানে আহ্বান জানিয়ে বলেন, "আমরা এই সংকটের সমাধান মায়ানমারে খুঁজে বের করতে হবে।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator