গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণের সুযোগ বন্ধ করতে এবং দলটিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারের মুখোমুখি করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আহ্বান জানিয়েছেন।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি যেন অংশ নিতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) বলেছে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এই আহ্বান জানান।
নুরুল হক নুর বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আইনগতভাবে তাদের বিচার চলছে। সুতরাং, তারা যেন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ না পায়। একইভাবে এই ফ্যাসিবাদীর দোসর যারা, জাতীয় পার্টিসহ কার্যত নামে ১৪ দল থাকলেও যাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া কঠিন—তাদের বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তিনি উল্লেখ করেন, মূলত এখানে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির মূল নেক্সাসটা ছিল, যেখানে একটি দল ক্ষমতা এবং অন্যটি বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা পালন করতো। সেই জায়গা থেকে তিনি জাতীয় পার্টির বিষয়ে বলেছেন যে, দলটি যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ না পায় এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে তাদের সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়েছে। কমিশন পরিষ্কারভাবে বলেছে যে, তারা আসলে কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে পারে না; এই সিদ্ধান্ত সরকার বা আদালতকে নিতে হবে। এর প্রতিক্রিয়ায় নুর সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সরকার যদি আগামীতে একটি শান্তিপূর্ণ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, তাহলে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জাতীয় পার্টিকেও যেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের এই মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। একই সঙ্গে জাতীয় পার্টির যে সমস্ত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা আছে, দুর্নীতির মামলা আছে, তাদের বিরুদ্ধেও যেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তিনি নির্বাচন নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ছোট-বড় সব দলের প্রার্থীরা এখন পূর্ণ উদ্যমে মাঠে কাজ করে বেড়াচ্ছেন। তবে, জুলাই সনদ নিয়ে যদি কোনো বিভক্তি বা বিভাজন থাকে, তাহলে নির্বাচন যথা সময়ে হবে না এবং বাধাগ্রস্ত হবে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে দেশে একটি চরম বিপদের সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের একটি ভূমিকা নেওয়ার সুযোগ আছে, তাই তারা যেন সরকার প্রধানের সঙ্গেও সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে।
জোটবদ্ধ হয়ে ভোট করার বিষয়ে ইসি'র বিদ্যমান বিধান প্রসঙ্গে নুর বলেন, কমিশন তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, জোটভুক্ত হয়েও নিজ দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার এই সিদ্ধান্ত ঐকমত্য কমিশনেই আলাপ-আলোচনা করে নেওয়া হয়েছিল। জোট গঠনের বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদ এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। আপাতত তারা একটি রাইজিং দল হিসেবে দলকে বিকশিত করতে এবং ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে কাজ করছেন। তবে, বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুত্ব রয়েছে এবং জামাতের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বিএনপি-জামাতের বাইরেও বিকল্প রাজনৈতিক জোট গঠন করা যায় কিনা, সে বিষয়েও আলাপ আলোচনা চলছে।



















