জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, কোনো মত কারও উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে না। সংবিধান সংশোধনের উদ্দেশ্যে গঠিত এই কমিশন সকল রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে চায়।
জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাউকে কোনো বিষয়ে বাধ্য করবে না। যেসব বিষয়ে সম্মত হওয়া কঠিন, সেসব বাদ দিয়েই আমরা আগাচ্ছি।
তিনি এ মন্তব্য করেন সোমবার, ৭ জুলাই সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের দশম দিনের বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময়।
বৈঠকটি শুরু হয় বেলা সোয়া ১১টায়। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, এলডিপি, সিপিবি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা অংশগ্রহণ করেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সব রাজনৈতিক দল একই বিষয়ে একমত হবে এমনটি ভাবা ঠিক নয়। তবে আমাদের লক্ষ্য হলো, যতটা সম্ভব ঐকমত্য সৃষ্টি করা এবং সেখান থেকে একটি যৌক্তিক, গ্রহণযোগ্য প্রস্তাবনা তৈরি করা।
তিনি আরও বলেন, আমরা সময়ের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় দ্রুত কাজ শেষ করতে চাই। সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
এই দিন আলোচনার মূল বিষয় ছিল—উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালতের বিস্তার, জরুরি অবস্থা ঘোষণা সংক্রান্ত বিধান এবং রাজনীতিতে নারীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন:
-
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ
-
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচএম হামিদুর রহমান আযাদ
-
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন
-
এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ
-
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স
-
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু
-
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি
-
এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ
-
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান
-
জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা
-
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক
-
এলডিপির মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম
-
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের
-
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি
-
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুমসহ আরও অনেকে।
আলোচনার পর অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রথমে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফ করবেন। এরপর দলগুলোর প্রতিনিধিদের আলাদাভাবে ব্রিফ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে দেশের সংবিধান সংশোধন এবং নতুন রাজনৈতিক কাঠামোর জন্য সম্মিলিত মতামত তৈরির উদ্দেশ্যে। এই কমিশনের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করে তা রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কমিশন এ বিষয়ে জনগণের মতামত গ্রহণ এবং প্রয়োজন হলে মাঠপর্যায়ে আলোচনা সভার আয়োজন করার চিন্তাভাবনাও করছে।