জামি'নে মুক্তি পেয়েই ৬ বিএনপি নেতাকর্মীকে কো'পা ল যুবলীগ নেতা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বরিশালে যুবলীগ নেতা আলআমিন আবারও আলোচনায়—জামিনে মুক্তি পেয়েই ৬ বিএনপি নেতাকর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করলেন। মাদকবিরোধী অবস্থানের কারণেই নৃশংস এ হামলা বলে দাবি পরিবার ও স্থানীয়দের।..

বরিশাল শহরের প্রাণকেন্দ্রে আবারও রক্ত ঝরল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়ে। জামিনে মুক্তি পেয়েই সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ নেতা আলআমিনের বিরুদ্ধে। রোববার (৪ মে) গভীর রাতে নগরীর স্টেডিয়াম কলোনীতে ছয়জন বিএনপি নেতাকর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন তিনি। আহতদের মধ্যে রয়েছেন বরিশাল মহানগর মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফেরদাউস হাওলাদার, শ্রমিক দলের ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আসলাম, বিএনপি নেতা রেজাউল করিম রাজা, এবং কর্মী শাহিন, কাওসার ও রাজিব খান।

ঘটনার পর আহতদের বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে।

পূর্ব ইতিহাসও একই রকম:

আলআমিনের বিরুদ্ধে এর আগেও এমন হামলার অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তিনি একই এলাকায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালান। সে ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে জেলেও যান তিনি। কিন্তু জামিনে বেরিয়েই ফের আরেকটি নৃশংসতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।

কে এই আলআমিন?

অভিযুক্ত আলআমিন বরিশালের চাঁদমারি এলাকার বাসিন্দা এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সক্রিয় সদস্য। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তিনি সাবেক কাউন্সিলর মজিবর রহমানের ক্যাডার হিসেবে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। শুধু রাজনৈতিক হামলাই নয়, এলাকায় জমি দখল ও মাদক ব্যবসার সঙ্গেও তার নাম জড়িয়েছে বহুবার।

আসলামের ভাই আবদুর রহিম জানান, “স্বৈরাচারী সরকার পালিয়ে গেলেও এলাকায় এখনো আলআমিন বাহিনীর অত্যাচার থামেনি। আমাদের ভাইয়েরা শুধু মাদকবিরোধী কথা বলায় এমন নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, চিকিৎসা শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান:

বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, “আমরা এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “আলআমিনের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক মামলা চলমান রয়েছে।”

রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে:

এই হামলার ঘটনায় বরিশালে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে। বিএনপির নেতারা বলছেন, সরকার দলীয় নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বারবার এমন হামলার ঘটনা ঘটছে, অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন।


 

বরিশালে আবারও প্রমাণ হলো, জামিন পাওয়া মানে দায়মুক্তি নয়। বরং সেটা হয়ে উঠছে পরবর্তী সহিংসতার রসদ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও মাদক বিরোধী অবস্থানকে কেন্দ্র করে এমন নৃশংসতা যদি দমন না করা হয়, তবে জননিরাপত্তা আরও হুমকির মুখে পড়বে—এমনটাই আশঙ্কা সাধারণ মানুষের।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি