ঢাবি পরীক্ষার্থীদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের সমাবেশ ঘিরে আগেভাগে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে বলেছে প্রশাসন। সময়মতো পরীক্ষায় উপস্থিত থাকা নিশ্চিত করতে এ নির্দেশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে। সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হবে শনিবার, ১৯ জুলাই, এবং এতে জনসমাগম ও সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করছে প্রশাসন। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা যাতে তাদের নির্ধারিত সময়ের আগেই পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে পারেন, সেজন্য আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিমাদ্রি শেখর চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “পরীক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য পরীক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবাই পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার প্রস্তুতি নেবেন, যেন নির্ধারিত সময়ের আগেই পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন মনে করছে, সমাবেশের দিন রাজধানীর আশপাশের এলাকায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে, বিশেষ করে শাহবাগ, টিএসসি ও মৎস্য ভবনের আশপাশের সড়কে। ফলে শিক্ষার্থীরা যদি যথাসময়ে বের না হন, তাহলে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি হতে পারে এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণে সমস্যা হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন নির্দেশনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এমন বড় রাজনৈতিক কর্মসূচির দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা না রাখাই উত্তম হতো। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষাসূচি অনুযায়ী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে বিভিন্ন বিভাগ ও পরীক্ষাকেন্দ্রসমূহে নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার দিন খুব সকালে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে যেন কোনো প্রকার বিড়ম্বনা ছাড়াই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়।
এদিকে, জামায়াতে ইসলামীর নেতারা জানিয়েছেন, তারা সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে চান এবং সাধারণ জনগণের চলাচলে যেন সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে তাদের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন পর জামায়াত রাজধানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সমাবেশ করতে যাচ্ছে, যা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। তবে এই সমাবেশের প্রভাব যেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম বা পরীক্ষা পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই জরুরি নির্দেশনা তাই শুধুমাত্র পরীক্ষার্থীদের জন্যই নয়, বরং একটি বৃহত্তর শিক্ষাবান্ধব উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে