জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে একটি ব্যতিক্রমধর্মী ও প্রশংসনীয় স্বাস্থ্য উদ্যোগ। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের তত্ত্বাবধানে এবং ডক্টরস্ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে হেপাটাইটিস-বি স্ক্রিনিং ও ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম চালু হয়েছে। এই জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিটি ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
১০ মে সকাল ১০টায় শুরু হয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রক্তের নমুনা সংগ্রহ ও স্ক্রিনিং কার্যক্রম। এতে অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীরা গত ৮ মে থেকে নিবন্ধন শুরু করেন, যা চলবে ২১ মে পর্যন্ত। নিবন্ধনের পর শিক্ষার্থীদের রক্ত পরীক্ষা ও স্ক্রিনিং করা হবে ১০ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত।
ভ্যাকসিন প্রদানের প্রথম ডোজ দেওয়া হবে ১৪ মে থেকে ২২ মে ২০২৫ এর মধ্যে। এরপর যথাক্রমে এক মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ দেওয়া হবে।
এই কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন উন্নতমানের টেস্ট কিট দিয়ে বিনামূল্যে হেপাটাইটিস-বি পরীক্ষা এবং বিনামূল্যে তিনটি ডোজে সম্পূর্ণ হেপাটাইটিস-বি টিকা গ্রহণের সুযোগ।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর আই নিউজ বিডিকে জানান,
"ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের তত্ত্বাবধানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা গতকাল স্ক্রিনিং কার্যক্রম শুরু করেছি এবং ১৪ মে থেকে টিকা প্রদান শুরু হবে। আশা করি শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে।"
এছাড়া তিনি বলেন, “এ ধরনের স্বাস্থ্য-সচেতনমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের হেপাটাইটিস বি’র মতো ভয়ংকর ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পাবে এবং একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।”
শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক জানান,
"ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি। সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করেই আমরা এই টিকাদান কর্মসূচি চালু করেছি এবং আশা করি এর মধ্য দিয়ে ছাত্রদল আরও বেশি শিক্ষার্থীবান্ধব হয়ে উঠবে।"
এ উদ্যোগকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তুলতে কাজ করছে ছাত্রদলের অন্য সদস্যরাও।
জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান সীমান্ত বলেন,
"একটি রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে এমন জনকল্যাণমুখী কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি প্রমাণ করে রাজনীতি শুধু আন্দোলন বা দাবির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—এটি মানুষের কল্যাণেও কাজ করতে পারে। আমি আশা করি ভবিষ্যতেও এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং অন্যান্য ছাত্রসংগঠনও এতে উদ্বুদ্ধ হবে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এ কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়েছে। অনেকেই জানিয়েছেন, তারা অতীতে কখনও এমন উদ্যোগ দেখেননি এবং এতে তারা নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে আরও সচেতন হতে পেরেছেন।
এই ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচিটি প্রমাণ করেছে যে রাজনীতি শুধু চেঁচামেচি বা সংঘর্ষের বিষয় নয়—এটি সমাজের কল্যাণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ছাত্রদলের এমন মানবিক ও স্বাস্থ্য-সচেতনমুখী উদ্যোগ দেশের অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও উদাহরণ তৈরি করতে পারে।
বিশেষ করে হেপাটাইটিস-বি’র মতো নীরব ঘাতকের বিরুদ্ধে সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয়।