close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি যেন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের কড়া সমালোচনায় ইউরোপীয় নেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং ইউরোপের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে।
ভ্যান্সের বিতর্কিত মন্তব্য:
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে আলোচনার জন্য এই সম্মেলন আয়োজিত হলেও, ভ্যান্স ইউরোপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও সমাজ নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি ইউরোপের গণতন্ত্র ও মৌলিক মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ভ্যান্সের মতে, ইউরোপের প্রধান হুমকি রাশিয়া বা চীন নয়, বরং তাদের অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের দুর্বলতা। তিনি বলেন, ইউরোপ তাদের মূল আদর্শ থেকে সরে যাচ্ছে।
ইউরোপীয় নেতাদের প্রতিক্রিয়া:
ভ্যান্সের মন্তব্যে ইউরোপীয় নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে ইউরোপের পরিস্থিতির ভুল ব্যাখ্যা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ভ্যান্স ইউরোপকে স্বৈরাচারী শাসনের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। অনেক ইউরোপীয় নেতা ও সিনেটর ভ্যান্সের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন এবং এটিকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা:
সম্মেলনে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হয়। ভ্যান্স এবং অন্যান্য মার্কিন কর্মকর্তারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও শান্তির জন্য স্থায়ী সমাধান নিয়ে আলোচনা হয়। ভ্যান্স জানান, আমেরিকা চায় যুদ্ধ শেষ হোক, তবে শান্তি হতে হবে স্থায়ী ও নিরাপদ। জেলেনস্কি জানান, তারা রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করবেন।
উদ্বেগ ও মতবিরোধ:
ইউরোপীয় নেতারা ভ্যান্সের বক্তব্যে তাদের উদ্বেগের কথা জানান। জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমাইয়ার বলেন, মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি ইউরোপের প্রতিষ্ঠিত নিয়ম, সহযোগিতা ও বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইনও ভ্যান্সের বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনের জন্য কোনো শর্তহীন শান্তির পরিকল্পনা ইউরোপের জন্য ক্ষতিকর হবে।
ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ও শান্তি প্রক্রিয়া:
মিউনিখ সম্মেলনে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ও শান্তি আলোচনা নিয়ে তীব্র আলোচনা হয়েছে। ইউরোপীয় মিত্রদের আশ্বস্ত করে ভ্যান্স বলেন, রাশিয়া চুক্তি স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করলে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হবে। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্নালেনা বেয়ারবক বলেন, ইউক্রেন ও ইউরোপীয়দের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো শান্তি আলোচনাই সফল হবে না।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে যে মতবিরোধ দেখা গেছে, তা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অন্যান্য বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখে, এই দুটি পক্ষের মধ্যে সহযোগিতা ও বোঝাপড়া আরও জরুরি।
Ingen kommentarer fundet