ইউনূসবিরোধী চক্রান্তে দিল্লির সম্পৃক্ততা দাবি ফয়জুল করীমের, সেনাপ্রধানের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন
লক্ষ্মীপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | ২৪ মে ২০২৫
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির এবং বরিশালের পীর সাহেব মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম সম্প্রতি এক বিস্ফোরক বক্তব্য দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তার দাবি, বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদ এবং নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশীয় রাজনীতির বাইরে থেকে হটিয়ে দেওয়ার পেছনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সুপরিকল্পিত নীলনকশা কাজ করছে।
লক্ষ্মীপুর জেলার দলীয় কার্যালয়ে ২৪ মে শনিবার দুপুরে একটি দায়িত্বশীল প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
"ইউনূস সরকারকে দিল্লি সহ্য করতে পারে না"
প্রশ্নোত্তর পর্বে ফয়জুল করীম বলেন, “ড. ইউনূস সরকারকে দিল্লির নেতৃত্ব সহ্য করতে পারে না। বিশেষ করে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ইউনূস বিরোধী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বাংলাদেশে নিজেদের অনুগত গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে ক্ষমতার প্রলোভন দিয়ে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।”
তিনি বলেন, “যারা ইউনূসকে সরানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তারা আসলে দিল্লির রাজনীতি করে। তাদের স্বার্থের জায়গা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়, বরং পররাষ্ট্র নীতির নামে ভারতের ইচ্ছাপূরণে।”
মানবিক করিডর নয়, চাই দেশের স্বার্থ
প্রেস ব্রিফিংয়ে ফয়জুল করীম ভারতের প্রস্তাবিত ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “যদি করিডরের পুরো সুবিধা শুধু ভারতের জন্য হয়, তাহলে আমরা তা মেনে নিতে পারি না। বাংলাদেশ যদি এই ব্যবস্থায় কোনো স্বার্থ পায়, কেবল তবেই আমাদের সমর্থন থাকবে। না হলে, দেশের জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে এমন পরিকল্পনা মানা যাবে না।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি স্পষ্টভাবে বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক অবস্থান ও স্বার্থ সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সেনাপ্রধানের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ
উল্লেখযোগ্যভাবে, তিনি দেশের সেনাপ্রধানের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়েও কড়া ভাষায় কথা বলেন। ফয়জুল করীম বলেন, “সেনাপ্রধানের দায়িত্ব দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষা করা—not রাজনীতিতে জড়ানো। রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সেনাপ্রধানকে অনুরোধ করবো—তিনি যেন অনধিকার চর্চা না করেন এবং তার মূল দায়িত্বের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ ইঙ্গিত
মুফতি ফয়জুল করীমের এ বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইতোমধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ক্ষমতাসীন দল কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বক্তব্য দেশের ভেতরে ও বাইরে নতুন আলোচনার জন্ম দেবে।
এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যে ভবিষ্যতে আরও কঠোর রাজনৈতিক অবস্থান নিতে পারে, তার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে এই বক্তব্য থেকে।



















