close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইসরাইলি গুপ্তচর মোসাদে’ অভিযুক্ত ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরাইলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের হয়ে কাজ করার দায়ে অভিযুক্ত পেদরাম মাদানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান। ইরানের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, ৪১ বছর বয়সী মাদানিকে বুধবার ভোরে তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে ফাঁসি..

পাঁচ বছরের তদন্ত, একঝলকে নিঃশেষ

২০১৯ সালে গ্রেফতারের পর থেকে মাদানি ছিলেন এভিন কারাগারে বন্দি। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর, সম্প্রতি তাকে স্থানান্তর করা হয় কারাজ শহরের ডেথ রো-তে। অভিযোগ ছিল তিনি ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে গোপনে যোগাযোগ রেখে তথ্য পাচার করতেন। তার লক্ষ্য ছিল ইরানের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও কৌশলগত স্থাপনাগুলোর তথ্য সংগ্রহ এবং বিদেশে সরবরাহ করা।

জার্মানিতে প্রশিক্ষণ, ইউরো ও বিটকয়েনে অর্থ

আদালতের রায় অনুযায়ী, মাদানি জার্মানিতে একাধিকবার ভ্রমণ করে বিদেশি গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ নেন। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে ব্রাসেলস ও ইসরাইল-অধিকৃত ভূখণ্ডে মোসাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রমাণও পেশ করা হয়।
অভিযোগে উঠে আসে, তিনি ইউরো ও বিটকয়েনের মাধ্যমে মোসাদ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পেয়েছিলেন। এসব অর্থের মাধ্যমে তিনি ‘অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন’ করেন – যা তার বিরুদ্ধে আরেকটি বড় অভিযোগ।

সর্বোচ্চ আদালতের সিলমোহর, ছাড় নেই

তার বিরুদ্ধে মামলা, আপিল এবং চূড়ান্ত রায়ের সব পর্যায়ে বিচার সম্পন্ন হয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ আদালত চূড়ান্তভাবে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করে।
ইরানের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, “এই রায় কার্যকর করে দেশ একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে — জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো ছাড় নেই।”


ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই ফাঁসি

এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময়টি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ঠিক এই সময়েই ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার উত্তেজনা নতুন করে উসকে উঠেছে।
বিশেষ করে, পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক চলছে। এর মাঝেই মাদানির ফাঁসি যেন একটি বারুদের স্ফুলিঙ্গ – যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।


মায়ের কান্না: “ছেলের রায় ছিল ত্রুটিপূর্ণ”

মাদানির মা এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “আমার ছেলে দেশপ্রেমিক। সে দেশের জন্য কাজ করেছে। এই রায় ছিল ত্রুটিপূর্ণ এবং তা বাতিল হওয়া উচিত ছিল।”
তবে ইরান সরকার বা আদালত এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।


মৃত্যু মিছিল: ২০২৫-এ এখনও পর্যন্ত ৪৭৮ জনের ফাঁসি

ইরানের মানবাধিকার সংস্থা জানায়, এ বছর (২০২৫) এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৭৮ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
এর মধ্যে শুধু শেষ ১০ দিনেই ৬০ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে!
এ ঘটনাগুলোর বেশিরভাগই নিরাপত্তা, মাদক এবং রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।


এটি দ্বিতীয় ঘটনা, আগেও মোসাদের হয়ে কাজ করার অভিযোগে ফাঁসি

মাদানির ঘটনা প্রথম নয়। এর আগে ২০২৫ সালের এপ্রিলেই মোহসেন লাংগারনেশিন নামে এক ইরানি নাগরিককে মোসাদের সহায়তায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের এক কর্মকর্তাকে হত্যা করার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
এই ধারাবাহিকতা ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইরান এখন গোয়েন্দা নিরাপত্তার প্রশ্নে সম্পূর্ণ 'জিরো টলারেন্স' নীতিতে এগোচ্ছে।


আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া?

এখনো পর্যন্ত পশ্চিমা বিশ্ব থেকে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মৃত্যুদণ্ড মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরাইল সম্পর্ককে আরও তিক্ত করে তুলবে।

Keine Kommentare gefunden