ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে যেন যুদ্ধের ঘনঘটা। আর তারই ফলশ্রুতিতে ইসরায়েলজুড়ে দেশটির সেনাবাহিনী Israel Defense Forces (IDF) জারি করেছে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা।
সূত্র বলছে, এই পদক্ষেপ এসেছে ইরানের পাল্টা আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায়। আইডিএফ জানায়, দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এর আওতায় জনসমাগম, চলাচল, সরকারি-আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ নিয়ে আরও উত্তেজনা ছড়িয়েছেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ তিনি এক বিস্ফোরক দাবি করেছেন —আমরা ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় খুব সফলভাবে হামলা চালিয়েছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে।
তিনি জানান, লক্ষ্য ছিল ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইস্পাহান — এই তিনটি স্থাপনা। তার পোস্ট অনুযায়ী, হামলা সম্পূর্ণ সফল, এবং বিমানগুলো নিরাপদে ফিরে এসেছে।
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের সঙ্গে একটি ওপেন-সোর্স ইন্টেলিজেন্স পোস্টের স্ক্রিনশটও যুক্ত ছিল। সেখানে বলা হয়েছে, শক্তভাবে সুরক্ষিত ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে।
তবে ইরান এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে,এই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় এমন কোনো পদার্থ নেই যা তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করতে পারে।
একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়, এই হামলার খবর অতিরঞ্জিত এবং বাস্তবতা বিকৃত করে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান এখন সরাসরি উত্তরের পথে যেতে পারে কিংবা কূটনৈতিকভাবে পশ্চিমা শক্তিগুলোর ওপর চাপ বাড়াতে পারে।
এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় আশঙ্কা — এ উত্তেজনা পুরোদমে যুদ্ধ-এ রূপ নিতে পারে কি না। যদি সত্যিই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সফল হামলা হয়ে থাকে, তবে তা ইরানের জন্য অপমানজনক এবং প্রতিশোধ অনিবার্য।
বিশ্ব রাজনীতিতে জটিলতা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা। বিশেষ করে রাশিয়া ও চীন এর সুযোগ নিতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
ইসরায়েল তার মাটিতে সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকলেও, এই সংকট যে মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে প্রভাব ফেলবে, তা নিশ্চিত। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার মতো সাহসী ঘোষণা ও ইরানের তা প্রত্যাখ্যান — দুই বিপরীতমুখী তথ্যের মাঝে আটকে আছে সত্য।