ইসরায়েলি আগ্রাসন , পাকিস্তানের ‘সাহসী অবস্থানের’ প্রশংসায় ইরানের সেনাপ্রধান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সাহসী অবস্থানে প্রশংসা ঝরালেন ইরানি সেনাপ্রধান। ফোনালাপে জানালেন– ইসলামাবাদ শুধু কথা নয়, কার্যত প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছে।..

ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিপরীতে পাকিস্তানের ‘সাহসী অবস্থানে’ উচ্ছ্বসিত প্রশংসা জানালেন ইরানের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল আবদুর রহিম মুসাভি। গতকাল রবিবার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এই মতামত দেন।

ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা মেহের এবং প্রেস টিভির বরাতে জানা যায়, ফোনালাপে মুসাভি বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে যখন অন্ধকার নেমে এসেছে, পাকিস্তান তখন এক সাহসিকতার আলো জ্বেলেছে। ইসলামাবাদের এই নৈতিক অবস্থান পুরো মুসলিম বিশ্বের সম্মান বাড়িয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, গত ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে যে সামরিক অভিযান শুরু করেছে, তা শুধু বর্বর নয়— একে 'যুদ্ধাপরাধ' হিসেবেও বিবেচনা করা উচিত। হামলার শুরুর দিকেই ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা এবং পরমাণু বিজ্ঞানীকে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছে।

এই হামলায় বহু বেসামরিক নাগরিক, নারী ও শিশু প্রাণ হারিয়েছে। ধ্বংস হয়ে গেছে অসংখ্য আবাসিক ভবন, হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। “এই মুহূর্তে আমাদের ক্ষয়ক্ষতি অনেক, কিন্তু আমাদের মনোবল অটুট,” বলেন মুসাভি।

তিনি দাবি করেন, “আমরা শুরুতে ক্ষতির শিকার হলেও যুদ্ধের কৌশলে ইসরায়েলের অনেক লক্ষ্য ভেস্তে দিয়েছি। এমনকি পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছিল যে, ইসরায়েল নিজেরাই অস্ত্রবিরতির অনুরোধ জানাতে বাধ্য হয়েছে।”

মুসাভি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে বলেন, “এই যুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকে কোনো সহায়তায় ঘাটতি রাখেনি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, আরও কয়েকটি পশ্চিমা দেশও ইসরায়েলকে সরাসরি সমর্থন দিয়েছে। এটা ছিল সুস্পষ্ট এক পেশীশক্তির প্রদর্শন। তবে আমরা তাতেও মাথা নত করিনি।”

ফোনালাপে পাকিস্তানকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইরানের এই শীর্ষ জেনারেল বলেন, “পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও সরকারের অবস্থান শুধু আমাদের পাশে নয়, এটা পুরো বিশ্বের নির্যাতিত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেয়। ইসলামাবাদ প্রমাণ করেছে, মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব এখনো তাদের হাতেই নিরাপদ।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তান ও ইরানের এই ঘনিষ্ঠতা শুধু কূটনৈতিক বন্ধুত্ব নয়, বরং এটি ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ও প্রতিরোধ কৌশলের দিকনির্দেশক হতে পারে। বিশেষ করে যখন পশ্চিমা বিশ্ব একতরফাভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, তখন মুসলিম বিশ্বের এমন ঐক্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

ইসরায়েলের আগ্রাসন থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনো কার্যকর ভূমিকা নেয়নি। জাতিসংঘে একাধিক প্রস্তাব উঠলেও ভেটোর ছায়ায় পড়ে থাকছে বহু সিদ্ধান্ত। এমন অবস্থায় পাকিস্তান ও ইরানের দৃঢ় অবস্থান আগামীর পথ দেখাতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।

Комментариев нет