ইসরায়েলের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র বহনের অভিযোগে ইতালির জেনোয়া বন্দরে সৌদি শিপিং কোম্পানি বাহরির একটি জাহাজ আটক করেছে বন্দরকর্মীরা। তবে বাহরি অভিযোগটিকে ভিত্তিহীন দাবি করে আইনি পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে।
ইতালির জেনোয়া বন্দরে আটক হয়েছে সৌদি আরবের একটি জাহাজ, যা ইসরায়েলের জন্য গোপনে অস্ত্র বহন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সৌদি শিপিং কোম্পানি ‘বাহরি’র মালিকানাধীন বাহরি ইয়ানবু নামের জাহাজটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র নিয়ে আসছিল। তবে সৌদি কোম্পানিটি এই অভিযোগকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ডনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বুধবার (১৩ আগস্ট) জানিয়েছে, বাহরি ইয়ানবু নামের জাহাজটি গত শুক্রবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর থেকে এসে ইতালির জেনোয়া বন্দরে পৌঁছায়। জাহাজটির মূল উদ্দেশ্য ছিল ইতালির প্রতিরক্ষা শিল্প প্রতিষ্ঠান লিওনার্দো থেকে সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করা। এই সরঞ্জামের মধ্যে ছিল আবু ধাবির জন্য প্রস্তুতকৃত একটি ওটো মেলারা কামান এবং ট্যাংকসহ ভারী অস্ত্রশস্ত্র।
কিন্তু ইতালির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, বন্দরকর্মীরা খবর পায় যে জাহাজটিতে ইতোমধ্যেই অস্ত্র ও গোলাবারুদ বোঝাই রয়েছে, যার গন্তব্য ইসরায়েল। এ তথ্যের ভিত্তিতে প্রায় ৪০ জন বন্দরকর্মী জাহাজে প্রবেশ করে এবং সেখানে অস্ত্রের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন। তাদের তদন্তে জানা যায়, জাহাজটি জেনোয়ায় আসার আগে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে অবস্থান করেছিল এবং সেখানেই অস্ত্র বোঝাই করা হয়।
এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন তুললেও সৌদি আরবের জাতীয় শিপিং কোম্পানি ‘বাহরি’ সোমবার তাদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতি দিয়ে অভিযোগটি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে অস্ত্র পরিবহনের খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং সৌদি আরবের নীতির পরিপন্থী।” বাহরি আরও জানায়, তারা ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে সৌদি আরবের দীর্ঘদিনের নীতির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং কোনো আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় আইনের লঙ্ঘন করে না।
কোম্পানিটি দাবি করে, তাদের সব কার্যক্রম কঠোর পর্যবেক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক নিয়মের অধীনে সম্পন্ন হয়। কখনোই তারা ইসরায়েলে কোনো পণ্য প্রেরণ করেনি বা এমন কোনো কার্যক্রমে জড়িত ছিল না। বাহরি অভিযোগ করেছে, এ ধরনের গুজব তাদের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা এবং প্রয়োজনে তারা এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেবে।
ঘটনাটি শুধু সৌদি আরব ও ইতালির মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেনি, বরং মধ্যপ্রাচ্যের চলমান অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে এমন খবর সামনে আসায় আন্তর্জাতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।