ইসরায়েলের জন্য ড্রোন তৈরির অভিযোগে ইরানে আটক ১৮

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলের জন্য ড্রোন বানানোর গোপন মিশনে জড়িত থাকার অভিযোগে ইরানে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় ওয়ার্কশপের ছদ্মবেশে তারা নকশা থেকে শুরু করে আত্মঘাতী ড্রোন পর্যন্ত তৈরি করছিল বলে জানায় আইআরজিসি।..

ইরানে আবারও এক চাঞ্চল্যকর গোয়েন্দা অভিযানে ধরা পড়েছে ইসরায়েলের হয়ে কাজ করা একটি গোপন ড্রোন চক্র। দেশটির শক্তিশালী নিরাপত্তা সংস্থা ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) জানিয়েছে, মাশহাদ শহর থেকে ১৮ জন ইরানি নাগরিককে আটক করা হয়েছে, যারা নাকি ইসরায়েলের জন্য নজরদারি ও আত্মঘাতী ড্রোন তৈরি করছিলেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দেশটির আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল এই সংবাদ নিশ্চিত করে। আইআরজিসি এক বিবৃতিতে জানায়, আটককৃতদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পক্ষে ড্রোনের নকশা তৈরি, প্রযুক্তিগত সমর্থন প্রদান এবং উৎপাদনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

সূত্র জানায়, এই চক্রটি মাশহাদের একাধিক স্থানে "লোকাল ওয়ার্কশপের" নাম ব্যবহার করে ড্রোন তৈরির কারখানা পরিচালনা করছিল। এখানেই তৈরি হচ্ছিল আত্মঘাতী ও নজরদারি ড্রোন—যেগুলো যে কোনো সময় ইরানের স্বার্থবিরোধী মিশনে ব্যবহৃত হতে পারতো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ইরান সম্পর্ক বর্তমানে চরম উত্তেজনামূলক পর্যায়ে রয়েছে। একাধিকবার ইরান অভিযোগ করেছে যে, তেলআবিব তাদের অভ্যন্তরে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক চালাচ্ছে এবং মোসাদ এজেন্টরা দেশজুড়ে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে লিপ্ত। এই গ্রেপ্তার তারই ধারাবাহিকতা।

আইআরজিসি আরও জানায়, আটককৃতদের মধ্যে কয়েকজন ইতোমধ্যেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ড্রোন মডেল, প্রযুক্তিগত নির্দেশনা এবং পারিশ্রমিক পাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া, তদন্তে আরও উঠে এসেছে যে—ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে এনক্রিপটেড অ্যাপ ও নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ করা হতো। এই অপারেশনটিকে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ‘মরন ফাঁদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে দেশটির প্রশাসন।

গত কয়েক মাসে ইরান একের পর এক মোসাদ সংশ্লিষ্ট এজেন্ট ও চক্র ধ্বংস করছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই গ্রেপ্তার ইসরায়েলের এক বড় ব্যর্থতা এবং একইসাথে ইরানের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সক্ষমতার এক প্রমাণ।

ইরান সরকার এখন আটককৃতদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিচ্ছে। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত আদালতে এই মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে আগামী সপ্তাহে।

 

মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, তাতে এ ধরনের ঘটনা শুধু ইরান-ইসরায়েল নয়, বরং গোটা অঞ্চলের জন্যই উদ্বেগজনক বার্তা বহন করে। ইরান যেভাবে নিজেদের ভেতরের গুপ্তচর চক্র ধ্বংস করছে, তা একদিকে নিরাপত্তা সুরক্ষিত করছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের প্রভাব খর্ব করছে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Keine Kommentare gefunden