close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় বাস্তুচ্যুত ৪ লাখ, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে লোমহর্ষক চিত্র..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গাজা যেন এখন মৃত্যুপুরী। যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে ইসরায়েলের নতুন আক্রমণে বাস্তুচ্যুত প্রায় ৪ লাখ মানুষ! নারী-শিশু কেউ রক্ষা পাচ্ছে না। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই এক ভয়ংকর মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র..

গাজায় আগুনের ঝড়: যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণ

মধ্যপ্রাচ্যের রক্তাক্ত ইতিহাসে আরও একটি কালো অধ্যায় যোগ হলো। গাজা উপত্যকায় আবারও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে ইসরায়েল। সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির পতনের পর নতুন করে চালানো এই হামলাকে বিশ্লেষকরা বলছেন—‘ইতিহাসের ভয়ংকরতম গণবিধ্বংস’। শিশু, নারী, বৃদ্ধ কেউ রেহাই পাচ্ছে না।

৭ এপ্রিল সোমবার জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতার বর্ণনা। তুরস্কভিত্তিক বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিলের পর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ফিলিস্তিনি—যা মোট গাজাবাসীর অন্তত ১৮ শতাংশ


 জাতিসংঘের চোখে ভয়ংকর বাস্তবতা

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানান, “গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলা এখন অব্যাহত। আমাদের মানবিক সহকর্মীরা জানিয়েছেন—প্রতিনিয়তই বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। শিশুদের লাশ ফিরছে, অনেকেই পঙ্গু হয়ে জীবনের জন্য লড়ছে।”

তিনি আরও বলেন, “মানুষজনকে বারবার এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। তারা এখন এমন সব স্থানে বাস করছে যেখানে খাদ্য, পানি, ওষুধ—কোনো কিছুরই নিশ্চয়তা নেই। নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থাও নেই।”

জাতিসংঘ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, এই ধারা চলতে থাকলে গাজার মানুষদের জন্য ‘বেঁচে থাকা’ই হবে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ।


 যুদ্ধাপরাধের চিত্র: জাতিসংঘের স্থাপনাও টার্গেটে

ইসরায়েলি বাহিনীর লক্ষ্য থেকে জাতিসংঘের কর্মীরাও রেহাই পাচ্ছেন না। জাতিসংঘ পরিচালিত স্বাস্থ্য ক্লিনিক, স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্রও হামলার শিকার হচ্ছে।

বিশেষ করে ২ এপ্রিল উত্তর গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক। তাদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধও রয়েছেন। এই হামলা হয়েছিল কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এই হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে একে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে উল্লেখ করেছে। তারা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে—এই অমানবিক হামলার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে।


 বিশ্ব নীরব, ইসরায়েল বেপরোয়া

যখন জাতিসংঘ একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে হামলার নিন্দা জানাচ্ছে, তখন ইসরায়েলি প্রশাসন—বিশেষত বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার—তার কোনো তোয়াক্কাই করছে না। বরং দিনদিন হামলার মাত্রা আরও বাড়াচ্ছে।

বিশ্ব সম্প্রদায়ও কার্যত নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এক সপ্তাহ কেটে গেলেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো শক্তিশালী আন্তর্জাতিক চাপ দৃশ্যমান নয়।


 ফিলিস্তিনিদের আহাজারি: “বিশ্ব এগিয়ে না এলে আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব”

গাজার ভুক্তভোগীরা বলছেন, “এভাবে যদি চলতেই থাকে, তাহলে আমাদের বাঁচার আর কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না। এবার যদি বিশ্ব এগিয়ে না আসে, তাহলে পুরো একটি জনগোষ্ঠী ইতিহাস থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।”


মানবতার জন্য এখনই সময় দাঁড়ানোর

এই মুহূর্তে প্রয়োজন গোটা বিশ্বের বিবেক জাগ্রত হওয়া। যুদ্ধ থামানো না গেলে, ইতিহাস সাক্ষী থাকবে—এটি ছিল এক নিষ্পাপ জাতির ধ্বংসযজ্ঞ। জাতিসংঘের প্রতিবেদন যেন সেই দুঃস্বপ্নের পূর্বাভাস।

Inga kommentarer hittades


News Card Generator