close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ইসরায়েলে সামরিক সহায়তা পাঠালে হামলার হুমকি ইরানের

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলে সামরিক সহায়তা পাঠালে সরাসরি হামলার হুমকি দিয়েছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্র ও তৃতীয় পক্ষকে আক্রমণের বৈধ লক্ষ্য বলেও ঘোষণা করেছে তেহরান।..

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যুদ্ধ পরিস্থিতি। ইরানের সাম্প্রতিক পাল্টা হামলায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে ইসরায়েল, আর সেই সাথে আরও বিস্ফোরক হয়ে উঠেছে ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন। এই উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশে রওনা হয়েছে এক ডজনেরও বেশি সামরিক বিমান। কিন্তু এখানেই ঘটেছে নাটকীয় মোড়—ইসরায়েলে সামরিক সহায়তা পাঠালে সরাসরি হামলার হুমকি দিয়েছে ইরান!

শনিবার, ২১ জুন, জর্ডানের সংবাদমাধ্যম ‘রয়া নিউজ’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইরান তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তৃতীয় কোনো দেশ যদি ইসরায়েলের পক্ষে সামরিক সহায়তা পাঠায়—তা নৌপথেই হোক বা আকাশপথে—তবে সেটি ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর ‘বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে’ পরিণত হবে। শুধু হুঁশিয়ারিই নয়, সরাসরি আক্রমণের হুমকি দিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান।

ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর এক মুখপাত্র রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভিডিও বার্তায় বলেন, “যে কোনো দেশ যদি ইসরায়েলি বাহিনীকে সামরিক, রাডার অথবা প্রযুক্তিগত সহায়তা পাঠায়, সেটা সরাসরি আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। আর সে ক্ষেত্রে আমরা নিরপেক্ষ থাকব না—তা তারা যেই হোক না কেন।”

এই বার্তা যে কেবল কথার কথা নয়, সেটার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ড্রোন প্রযুক্তি, সবকিছুই এখন সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরানের মিত্র মিলিশিয়াগুলোও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে গোপন সূত্র জানিয়েছে।

ইসরায়েলের হয়ে যুদ্ধের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্রই এবার কড়া বার্তা দিল তেহরান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের আগ্রাসী যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে, তবে তা হবে মারাত্মক ভুল। এর ফল শুধু ভয়াবহ নয়, বরং অপূরণীয় হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন পরিণতি আনব যা ইতিহাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চরম ক্ষতির উদাহরণ হয়ে থাকবে। এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা শুধু তাদের নয়, সমগ্র অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”

এর আগেই, ১৮ জুন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের মানেই হবে, আমেরিকা তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে। তারা যা নষ্ট করবে, আমরা তাদের তার চেয়ে বহুগুণ ক্ষতির স্বাদ চাখাবো। এই ক্ষতি শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক নয়—এটি হবে স্থায়ী ও অপূরণীয়।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের এই হুমকি নিছক রণনীতিক চাল নয়; বরং এটি বাস্তব হামলার পূর্বাভাস হতে পারে। সাম্প্রতিক পাল্টা হামলা, ড্রোন অভিযানে ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে থাকায়, দেশটির মিত্ররা উদ্বেগে রয়েছে। অন্যদিকে, ইরান তার অঞ্চলে শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে এখন নজর মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে। ইসরায়েল কীভাবে এই হুমকির জবাব দেয়, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা কী কৌশল নেয়—তা নির্ধারণ করবে আসন্ন যুদ্ধের গতিপথ। এই মুহূর্তে একটি ভুল পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলকে ছুঁড়ে দিতে পারে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে।

ইরানের এই সরাসরি হুমকি শুধু ইসরায়েলের জন্য নয়, যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বশক্তির জন্যও এক বড় পরীক্ষা। যুদ্ধের মঞ্চ প্রস্তুত, প্রতিটি সিদ্ধান্ত এখন সময়ের চেয়ে বেশি দামি। বিশ্বের দৃষ্টি এখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে—বিস্ফোরণ কি আসন্ন?

Aucun commentaire trouvé


News Card Generator