close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইসরায়েলে ফের মুহুর্মুহু ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে আবারও ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। তেলআবিব ও জেরুজালেমে বিস্ফোরণের পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে—আপাতত সবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা উচিত। যুক্তরাষ্ট্রও হ..

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা আবারও বিস্ফোরক রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে ইরান থেকে ছোড়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশে বিস্ফোরিত হয়। এতে জেরুজালেম ও তেলআবিবের বাসিন্দারা তীব্র আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।

আইডিএফ-এর এক মুখপাত্র জানান, "বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আমরা একাধিক আগ্রাসন লক্ষ্য করছি। ইরান আমাদের ভেতরকার শহরগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খুলে দিয়েছি এবং সবাইকে সেখানে অবস্থান করতে বলা হচ্ছে।"

সেইসঙ্গে জেরুজালেম ও তেলআবিবের বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, যার বেশিরভাগই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হলেও অন্তত চারটি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভেদ করেছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

আল জাজিরার লাইভ রিপোর্ট অনুযায়ী, বিস্ফোরণের ফলে জেরুজালেম ও তেলআবিবের অনেক বাসিন্দা মধ্যরাতেই রাস্তায় নেমে পড়েন, যদিও পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে আইডিএফ।

ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আন্তর্জাতিক রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ব্লুমবার্গের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা ইরানে সম্ভাব্য পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বুধবার (১৮ জুন) ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পেন্টাগনের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এখন পরিস্থিতি বিবর্তনের পথে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে এটি মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে বসে থাকবো না। আমাদের মিত্রদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অগ্রাধিকার।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এক জোরালো বার্তায় বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রকে বুঝতে হবে, তাদের সামরিক হস্তক্ষেপ ইরানের জন্য নয়, বরং তাদের নিজেদের জন্যই অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।”

তিনি আরও বলেন, “ইরানি জাতি কখনো চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ বা চাপিয়ে দেওয়া শান্তি মেনে নেয়নি। আমরা কারও চোখরাঙানিতে মাথানত করি না, করবোও না।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হামলা ও পাল্টা হুমকির মধ্য দিয়ে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা এবার সরাসরি সামরিক সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। যেখানে শুধু দুটি দেশ নয়, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, লেবাননের হিজবুল্লাহ, এমনকি সিরিয়াও জড়িয়ে পড়তে পারে।

এই মুহূর্তে ইসরায়েলজুড়ে রেড অ্যালার্ট, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ সতর্কতায়, আর সাধারণ মানুষ অনিশ্চয়তা আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মহলও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং জাতিসংঘ জরুরি বৈঠক ডাকতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব বহু পুরনো, তবে এবার সেটা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। উভয় পক্ষই সরাসরি সামরিক আক্রমণে জড়িয়ে পড়েছে এবং এর ফল যে পুরো অঞ্চলে বিস্তৃত হবে, তা বলাই যায়। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি এখন শুধু ইসরায়েল বা ইরানের নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যই এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Hiçbir yorum bulunamadı


News Card Generator