ইসলামী দলগুলোকে এক করার উদ্যোগ চলছে: চরমোনাই পীর 29/29

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Efforts are underway to unify Islamic parties in Bangladesh. Charmonai Pir is reportedly in talks with Hefazat and other Islamist groups—raising questions about a new political alliance.

দেশের ইসলামী দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার চেষ্টা চলছে। চরমোনাই পীর হেফাজত, খেলাফতসহ অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। রাজনীতিতে বড় জোটের ইঙ্গিত?

বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে একটি নতুন উদ্যোগ—ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা। জানা গেছে, চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম নিজেই এই প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে রয়েছেন এবং এরই মধ্যে একাধিক ইসলামী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ শুরু করেছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ইসলামী ভোটব্যাংক বড় একটি শক্তি হয়ে উঠতে পারে, যদি তা এক ছাতার নিচে আনা যায়। গত কয়েক বছরে ইসলামী দলগুলো নানা কারণে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। একদিকে হেফাজতের একাংশ সরকারঘেঁষা অবস্থানে চলে গেছে, অন্যদিকে খেলাফত মজলিশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বা জমিয়তুল উলামা-এ ইসলাম পৃথক পৃথকভাবে মাঠে সক্রিয় থাকলেও কোনো ঐক্য দেখা যায়নি।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর বিভিন্ন সভা-সেমিনারে প্রকাশ্যে বলেছেন, ইসলামী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ না করলে “নাস্তিক্যবাদ ও অনৈতিকতা” রোধ করা সম্ভব হবে না। এই বক্তব্যের পর থেকেই মাঠে সক্রিয়তা বেড়েছে। বিভিন্ন সূত্র জানায়, চরমোনাই পীর গত কয়েক সপ্তাহে খেলাফত মজলিশ, জমিয়ত, হেফাজত ও অন্য ইসলামপন্থী দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

এই উদ্যোগের পেছনে রাজনৈতিক কৌশলও রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। সামনে জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে যদি বিএনপি ও জামায়াত রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে, তাহলে একটি শক্তিশালী ইসলামী জোট গঠনের মধ্য দিয়ে তারা বিকল্প শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। চরমোনাই পীর নিজেও এর আগেও নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন, এবং বর্তমানে তার দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছে।

তবে এই ঐক্যের পথে রয়েছে কিছু বড় চ্যালেঞ্জ। দলগুলোর মধ্যে আদর্শিক বিভাজন, নেতৃত্ব নিয়ে মতপার্থক্য এবং অতীতের ক্ষোভ ও অবিশ্বাস একটি বড় বাধা হতে পারে। বিশেষ করে হেফাজতের একাংশের সরকারপন্থী অবস্থান এবং জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কিত বিতর্ক অনেককে দ্বিধায় ফেলেছে।

এই পরিস্থিতিতে চরমোনাই পীরের উদ্যোগ কতটা সফল হবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। তবে ইসলামী দলগুলোর ঐক্য যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে সেটি আগামী নির্বাচনের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই জোট একটি “থার্ড ফোর্স” হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেক বিশ্লেষক।

অতএব, দেশের রাজনীতিতে পরবর্তী ধাপে চরমোনাই পীরের ভূমিকা হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে তিনি নতুন মেরুকরণ ঘটাতে পারবেন কিনা, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

Nessun commento trovato