চাঁদাবাজ ও খুনিদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে চরমোনাই পীর বলেন, যারা বিদেশি প্রেসক্রিপশনে দেশ চালাতে চায়, তাদের বাংলার জমিনে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় যখন চাঁদাবাজি, খুন এবং বিদেশমুখী রাজনীতির অভিযোগ বারবার সামনে আসছে—তখন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মোহাম্মাদ রেজাউল করিম এক দৃঢ় ও তেজস্বী বার্তা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, "চাঁদাবাজ, খুনি ও অর্থ পাচারকারীদের বাংলার মাটিতে দাঁড়াতে দেওয়া যাবে না।"
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার কাপুড়িয়া পট্টিতে আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই সমাবেশ ছিল হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে এক ঐতিহাসিক দৃশ্য। জনতার ঢল ছিল দেখার মতো। দুপুরের পর থেকেই মিছিলের পর মিছিল এসে সমাবেশস্থল পূর্ণ করে ফেলে।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, “যারা ব্যক্তি স্বার্থকে দেশের স্বার্থের ওপরে স্থান দেয়, যারা বিদেশি প্রেসক্রিপশনে দেশ চালাতে চায়, তাদের কোনোভাবেই বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে চলতে দেওয়া যাবে না। আমাদের সবাইকে ইসলামের পক্ষে, মানবতার পক্ষে ও দেশ গড়ার পক্ষে রাজপথে নামতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা এই দেশে জন্ম নিয়েছি, তাই দেশের ভালোমন্দ নিয়ে ভাবা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। ৫ আগস্টের পর থেকে দেশে একটি নতুন রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখন সময় এসেছে পরিবর্তনের। ইসলামকে যারা ভালোবাসে, দেশের জন্য যারা চিন্তিত—তাদের একত্রিত হয়ে লড়াই করতে হবে।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মোরেলগঞ্জ উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা এইচ এম সাইফুল ইসলাম। এ সময় আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল, বাগেরহাট-৪ আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা ওমর ফারুক বিন নূরী, জেলা সভাপতি মাওলানা মাহফুজুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসাইন।
সমাবেশে বক্তারা বারবার জাতির বিবেককে জাগ্রত করার আহ্বান জানান। তারা বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ আর প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না। ভোটের নামে নাটক বরদাস্ত করা হবে না। এবার ইসলাম ও মানবতার জয় নিশ্চিত করতে হবে।”
জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম বলেন, “বাংলাদেশে বারবার জনগণকে প্রতারিত করা হয়েছে। এখন সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধভাবে সত্য ও ন্যায়ের পথে হাঁটার। ইসলাম এবং মানবতার পক্ষে সবাইকে জোটবদ্ধ হতে হবে।”
এ সমাবেশ ইসলামী শক্তির একটা নতুন জাগরণের বার্তা দিল বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। চরমোনাই পীরের বক্তব্য নতুন করে দেশের রাজনৈতিক আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে।
এবারের সমাবেশ কেবল একটি দলীয় কর্মসূচি ছিল না—এটি ছিল একটি দিকনির্দেশনা, একটি আদর্শিক অবস্থান, যা আগামী রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।