close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ঈশ্বরগঞ্জে অবৈধ চাল আটকের পর জানা গেল বৈধ

Md Ubaydullah Rume avatar   
Md Ubaydullah Rume
উবায়দুল্লাহ রুমি, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে প্রতিদিনই শত শত বস্তা কাবিখা-টিআর এর নামে বরাদ্দকৃত চাল অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। সরকারি খাদ্য গুদামের চাল চিহ্নিত কিছু ব্যবসায়ী ও স্থানীয় কিছু রাইচ মিলের মালিক ওই চাল নাম মাত্র মূল্যে নিয়ে যাচ্ছে। আবার সেই চাল নিয়ে বস্তা বদল করে স্থানীয় মিলের নাম ব্যবহার করে সরকারের কাছেই উচ্চ দামে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।

গত ২জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার জালপাড়া নামক স্থানে সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে বেরিয়ে আসা চাল বোঝাই একটি টমটম ও একটি পিকআপ দেখে স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মী চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা বৈধ কোন কাগজ দেখাতে পারেনি। এমনকি চালগুলো ক্রয়কৃত কোন মালিকের নামও বলতে পারেনি।

পরে খাদ্যগুদামে যোগাযোগ করে জানা যায়, চালগুলো ২০২৪-২৫অর্থ বছরের কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের চাল। জাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান, উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের (মহিলা) সদস্য মোছা: ইয়াছমিন ও রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (মহিলা) সদস্য হাজেরা আক্তার রিনার নামে ওই চাল বরাদ্দ ছিল। দুটি পরিবহনে মোট চাল ছিল ১৬টন।

জাটিয়া ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, তিনি জাটিয়া ইউনিয়নের সুটিয়া বাজারের সাফির উদ্দিনের বাড়ি থেকে হান্নানের বাড়ি পর্যন্ত একটি প্রকল্পের কাজ করেছেন। তার বরাদ্দকৃত দুই টন চাল বিক্রি করেছেন চাল ব্যবসায়ি হাসানের কাছে। অথচ খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহকৃত কাগজে মিজানের নাম ৫.২১৬ মেট্রিক টন চাল উল্লেখ রয়েছে।

রাজিবপুর ইউপি সদস্য হাজেরা আক্তার রিনা বলেন, রাজিবপুর ইউনিয়নের সীমারবুক এলাকার সুরুজ আলীর বাড়ি থেকে সামছুদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত একটি প্রকল্পের কাজ করেছেন। তার বরাদ্দকৃত আড়াই টন চাল বিক্রি করেছেন চাল ব্যবসায়ী আহমদ এর কাছে। অথচ খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহকৃত কাগজে হাজেরা আক্তার রিনার নামে ৬.৬০৯ মেট্রিক টন চাল উল্লেখ রয়েছে।

উচাখিলা ইউপি সদস্য মোছা: ইয়াছমিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তার প্রকল্পের বিষয়ে কোন প্রকার সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। কাবিখা প্রকল্পের চাল বিক্রির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

এখানেও তথ্যের বিভ্রাট ঘটে যখন আটককৃত পরিবহন চালকরা চালগুলো আঠারবাড়ির জয়দুল্লার রাইস মেইলের নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন।

চাল ক্রেতা আঠারবাড়ির রাইস মেইল মালিক জয়দুল্লা জানান, তিনি মোট ২৩ মেট্রিক টন চাল ব্যবসায়ী হাসান ও আহমদ মাস্টারের কাছে থেকে প্রতি মেট্রিক টন ৪৪ হাজার টাকা ধরে ক্রয় করেছেন।  

স্থানীয় লোকজন বলেন, প্রকৃত ঘটনা এভাবেই আড়াল করে সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে প্রতিদিনই শত শত বস্তা কাবিখা-টিআর এর নামে বরাদ্দকৃত চাল অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছে।

এবিষয়ে খাদ্য গুদামের সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, চালগুলো বৈধ ছিল কিন্তু চালকরা গুদাম থেকে চাল ছাড়ের কাগজপত্র সঙ্গে না নেওয়ায় ওই বিভ্রাট ঘটেছে। গুদাম থেকে অবৈধভাবে চাল বের হওয়ার কোন সুযোগ নেই। ছাড়পত্রের কাগজ ছাড়া গোদাম থেকে চাল কিভাবে নিয়ে যাওয়া হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে কেউই ছাড়পত্রের কাগজ নেন না। ছাড়পত্রের কাগজ দেখাতে নিয়ে আসলে দেখা যায় তিনি স্বাক্ষরই করেন নি।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা রহমান খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যগুদামে উপস্থিত হন। ওই সময় তিনি বলেন, এটি কাবিখা প্রকল্পের চাল ছিল। শ্রমিকরা কাজের বিনিময়ে চাল না নেয়ায় চাল গুলো বিক্রি করে শ্রমিকদের টাকা দেয়া হবে। 

Inga kommentarer hittades


News Card Generator