close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ইস রা য়ে লি হা মলা য় ই রানি পরমাণু বিজ্ঞানীসহ পরিবারের ১১ সদস্য নি হ ত..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুদ্ধবিরতির ঠিক আগে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের এক পরমাণু বিজ্ঞানী ও তার পরিবারের ১১ জন নিহত। এই হামলা ঘিরে তীব্র উদ্বেগ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।..

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত করে তুলেছে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক এক বিমান হামলা। ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় আস্তানেহ আশরাফিহ শহরে চালানো এই আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির এক গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু বিজ্ঞানী সেদিঘি সাবের এবং তার পরিবারের ১১ জন সদস্য। সোমবার, ২৩ জুন রাতে এই হামলা চালানো হয়, যখন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ঠিক কয়েক ঘণ্টা বাকি ছিল।

এ হামলার খবর প্রকাশ্যে আসার পরপরই ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি নিশ্চিত করে, নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও ছিলেন। এমন এক হামলা, যেখানে পরিবারের পুরো একটি বংশধারা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলো, তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দার ঝড় তোলে।

ইসরায়েল এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও, বিভিন্ন পশ্চিমা কূটনৈতিক সূত্র এবং প্রেস টিভির তথ্য মতে, চলমান ১২ দিনের লড়াইয়ে ইসরায়েল অন্তত ১৪ জন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীকে টার্গেট করেছে। নিহতদের মধ্যে ছিলেন রসায়নবিদ, পদার্থবিদ, নিউক্লিয়ার প্রকৌশলী এবং কৌশলগত পরিকল্পনাকারীরা।

ফ্রান্সে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত জোশুয়া জারকার এক বিবৃতিতে মন্তব্য করেন, “এই হামলাগুলোর মাধ্যমে ইরানের পরমাণু সক্ষমতায় বড় রকমের ধাক্কা লাগবে। এই বিজ্ঞানীরা না থাকলে ইরান কয়েক বছর পিছিয়ে পড়বে।” তিনি আরও যোগ করেন, “যারা বেঁচে গেছেন, তাদের হাতে সরঞ্জাম থাকলেও কৌশলগত নির্দেশনার অভাবে কার্যকরী অগ্রগতি হবে না।”

তবে অনেক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক এই বক্তব্যে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি এখন নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে না। ইরানের হাতে এখনো বহু প্রতিভাবান ও প্রশিক্ষিত বিজ্ঞানী রয়েছেন, যারা প্রয়োজনে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “যদিও হামলাগুলো সাময়িক ধাক্কা দিতে পারে, তবে তেহরানের দীর্ঘমেয়াদি পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে দমন করা সম্ভব নয়। এসব হামলা শুধু মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করে এবং আন্তর্জাতিক উত্তেজনা বাড়ায়।”

বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলেছেন—যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আগের মুহূর্তে কেন এমন ধ্বংসাত্মক হামলা চালানো হলো? এটি কি কেবলমাত্র ইরানকে দুর্বল করা, নাকি ভবিষ্যতে আরও বড় পরিকল্পনার অংশ?

বিশ্ব নেতারা এখন এই ঘটনার নৈতিকতা ও বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, যুদ্ধবিরতির সময় এমন হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল হতে পারে। জাতিসংঘও বিষয়টি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে থামাতে বারবার সামরিক পদক্ষেপ নিচ্ছে ইসরায়েল। কিন্তু এই পথে কি শান্তি সম্ভব? নাকি এসব হামলা শুধু মধ্যপ্রাচ্যে আরও বারুদ ছড়িয়ে দিচ্ছে?
পরমাণু বিজ্ঞানী ও তার পরিবারের ১১ জনের মৃত্যু শুধু একটি দেশের ক্ষতি নয়, বরং তা মানবতার বুকে এক গা শিউরে ওঠা দাগ।

Комментариев нет