close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রে যৌথ হামলার কথা ভাবছেন ট্রাম্প..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরে উত্তপ্ত আলোচনায় ফেটে পড়ছে মধ্যপ্রাচ্যের অশান্ত বারুদ! ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে যৌথ হামলার পরিকল্পনায় ট্রাম্প—জড়িত ইসরায়েলও। বিশ্ব রাজনীতি কোন ভয়ঙ্কর মোড় নিতে যাচ্ছে?..

মার্কিন রাজনীতির অগ্নিগর্ভ নাট্য মঞ্চে আবারও দেখা দিলো ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনার নতুন দৃশ্যপট। হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরে সম্প্রতি একটি গোপন বৈঠকে আলোচিত হয়েছে এমন এক সম্ভাবনা, যা গোটা মধ্যপ্রাচ্যকেই অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথভাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সামরিক হামলার পরিকল্পনা।

বিশ্ব গণমাধ্যম সিবিএস নিউজ এক প্রতিবেদনে জানায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারো রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন এই সাহসী ও বিতর্কিত প্রস্তাবনার কারণে। ট্রাম্পের নেতৃত্বে হোয়াইট হাউসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় এ ধরনের হামলার সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রতিবেদনের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র।

এই আলোচনায় ইরানের ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্র-এর মতো কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে হামলার প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফোরদো হচ্ছে এমন একটি চুল্লি যেখানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চলে আসছে গোপনে এবং কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, যদি এই কেন্দ্রে আঘাত হানা হয়, তা হলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে।

তবে এই পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের অভ্যন্তরেই ভিন্নমত বিরাজ করছে। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের অনেকে এখনো এর পক্ষে বা বিপক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসেননি। কেউ কেউ মনে করছেন, এমন পদক্ষেপ নিলে শুধু ইরান নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে—বিশেষ করে হিজবুল্লাহ বা হামাসের মতো ইরানঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীগুলো সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই আক্রমণাত্মক কৌশল মূলত নির্বাচনী প্রচারের একটি অংশ হিসেবেও কাজ করতে পারে। মার্কিন রাজনীতিতে ইসরায়েল-সমর্থক ভোটারদের একটি বড় অংশ আছে, যারা ইরানবিরোধী অবস্থানে ট্রাম্পকে পছন্দ করে থাকে। তাই এই পদক্ষেপ তার রাজনীতিক সুবিধার অংশ হতে পারে।

ইরানের প্রতিক্রিয়া এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ পায়নি, তবে ইরান পূর্বেও বারবার হুঁশিয়ার করে দিয়েছে যে, পারমাণবিক স্থাপনায় সামান্যতম হামলার চেষ্টা হলে তার প্রতিক্রিয়া হবে “বিপর্যয়কর এবং বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলবে।” ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বা সশস্ত্র বাহিনী যে কোনো ধরনের আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত বলে তারা দাবি করে আসছে।

বিশ্লেষকরা এটাও বলছেন, ইসরায়েলের অংশগ্রহণ মানেই সরাসরি যুদ্ধের আশঙ্কা বেড়ে যাওয়া। কারণ ইরান বরাবরই ইসরায়েলের অস্তিত্বের বিরোধিতা করে এসেছে এবং যেকোনো সামরিক পদক্ষেপকে ‘সর্বাত্মক প্রতিরোধের মাধ্যমে মোকাবিলা’র ঘোষণা দিয়েছে।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর এখন হোয়াইট হাউসের দিকে।
এই আলোচনা বাস্তবে রূপ নেবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়, তবে এমন পরিকল্পনার গুঞ্জনেই আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাও এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে।

বিশ্ব শান্তি বর্তমানে এক অনিশ্চিত মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। ট্রাম্পের এই কৌশল বাস্তবে রূপ নিলে পরিণতি যে ভয়াবহ হতে পারে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

এই ধরনের ঘটনা শুধু যুদ্ধের ঝুঁকি নয়, বরং বিশ্ব জ্বালানি বাজার, অর্থনীতি এবং কূটনৈতিক ভারসাম্যের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই পরিস্থিতির দিকে চোখ রাখছে গোটা দুনিয়া।

No comments found