close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইরানের সাথে যুদ্ধে প্রতি রাতে ২৮ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ হচ্ছে ইসরায়েলের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক ধসে পড়ছে ইসরায়েল। প্রতি রাতেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় খরচ হচ্ছে প্রায় ২৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার। প্রথম ৪৮ ঘণ্টায় উড়ে গেছে দেড় শ কোটি ডলার! বিশ্..

ইরানের সঙ্গে সরাসরি সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার পর থেকে ভয়াবহ আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে ইসরায়েল। প্রতিরাতেই দেশটির রাষ্ট্রীয় বাজেটে যোগ হচ্ছে নতুন করে শত শত মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি। শুধু ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ইসরায়েলের প্রতিরাতের খরচ এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার

‘দ্য মার্কার’ নামের একটি ইসরায়েলি অর্থনীতি বিষয়ক সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্যমতে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রতিহত করতে আয়রন ডোম, ডেভিড’স স্লিং এবং অ্যারো সিস্টেমের মতো ব্যয়বহুল প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিটি ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রের দাম কয়েক লাখ ডলার, যা প্রতিদিনের অপারেশনে পরিণত করছে বিশাল ব্যয়ের এক দুঃস্বপ্নে।

শুধু প্রথম ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধেই ইসরায়েলের সামরিক খরচ হয়েছে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার অর্ধেক প্রতিরক্ষা আর বাকি অর্ধেক ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে হামলায় ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানের সাবেক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেয়েম আমিনাখ

ইরানের টানা ছয় দিনের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ঠেকাতে গিয়ে ইসরায়েলের স্টক থাকা অ্যারো ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রগুলোও দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে মজুদ গড়তে সময় লাগবে এবং এতে আরও কয়েকশ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে।

ইসরায়েলের অর্থনীতিবিদদের দাবি, এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে দেশটির বাজেট কাঠামো সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়বে। বাজেট ঘাটতির পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। ব্যয়ভার জনগণের কাঁধে গিয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের মতো ছোট অথচ টেকসই অর্থনীতির দেশ যদি প্রতিদিন এমন বিপুল অর্থ শুধু প্রতিরক্ষায় ব্যয় করে, তাহলে তা আর্থিক ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, যুদ্ধের আগেও ইসরায়েল তার সামরিক বাজেট বাড়াতে গিয়ে সামাজিক খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছিল। এখন যুদ্ধকালীন খরচ সেই চাপকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলেছে।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যুদ্ধ চলতে থাকলে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সহায়তার দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হবে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার সমালোচনার মুখে এমন আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে সহায়তা পাওয়া কঠিন হবে।

আল জাজিরা ও রয়টার্স সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীকে প্রতিদিন গড়ে ৭২ কোটি ৫০ লাখ ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে হচ্ছে। শুধু অস্ত্র বা প্রযুক্তি নয়, সৈন্যদের রসদ, সরবরাহ ও যুদ্ধক্ষেত্রের লজিস্টিকসেও এই বিপুল অর্থ গচ্ছিত হচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধের শেষ নেই, তবে অর্থনীতির শেষ একটা সময় এসে যেতে পারে। ইরানের বিপক্ষে লড়াইয়ে ইসরায়েল সামরিকভাবে সফল হলেও, অর্থনৈতিকভাবে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে তা এখনই প্রশ্নবিদ্ধ। যুদ্ধ কি তাহলে শুধু জয়ের নয়, ব্যয়বহুল ধ্বংসযজ্ঞের আরেক নাম হয়ে দাঁড়াচ্ছে?

Aucun commentaire trouvé