close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইরানের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ‘ভুল তথ্য’ দিয়েছে গোয়েন্দা বিভাগ , ট্রাম্প..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে কি না, তা নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগকে প্রকাশ্যে ভুল বললেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তুলসি গ্যাবার্ডের রিপোর্ট নাকচ করে তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্য সঠিক নয়। ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের উ..

মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের একবার আলোচনার কেন্দ্রে। ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অস্বীকার করে এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তিনি। এয়ার ফোর্স ওয়ানের পাশে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প সোজাসুজি বলেন, “আমার গোয়েন্দা সংস্থা ভুল করেছে।

এই বক্তব্যের ফলে মার্কিন প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিভাজন নতুন মাত্রা পেল। জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড সম্প্রতি জানান যে, ইরান বর্তমানে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না — এমন গোয়েন্দা তথ্যে নিশ্চিত। কিন্তু ট্রাম্প তা সরাসরি নাকচ করে বলেন, “সে ভুল বলেছে।

প্রেসিডেন্ট থাকাকালীনও ট্রাম্প প্রায়শই গোয়েন্দা তথ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। সাংবাদিকরা তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তার কাছে কি এমন কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে যা প্রমাণ করে যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে? ট্রাম্প উত্তরে বলেন, “তাহলে আমার গোয়েন্দা সংস্থা ভুল। কে এটা বলেছে? তারা ভুল বলেছে।”

তাঁর এই বক্তব্যের ফলে একদিকে যেমন মার্কিন প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে বিশ্বরাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নতুন উত্তেজনা। বিশেষ করে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনার সময় এ ধরনের মন্তব্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প আরও বলেন, যুদ্ধের ময়দানে ইসরায়েল ভালো করছে। আপনি বলতে পারেন ইরান ততটা ভালো করছে না।

তিনি উল্লেখ করেন, যদি কোনো পক্ষ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আনে, তবে তিনি তা সমর্থন করতে পারেন। তবে ইউরোপ এই সংঘাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন।

এই বক্তব্যে স্পষ্ট, ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য সংঘাতে ইসরায়েলের পাশে অবস্থান নিলেও যুদ্ধবিরতিতে তিনি আপত্তি করছেন না। তবে ইউরোপের ভূমিকাকে অবমূল্যায়ন করে তিনি স্পষ্টতই একটি বার্তা দিয়েছেন: এই সংঘাতে বড় সিদ্ধান্ত নেবে আমেরিকাই।

ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে এমন অভিযোগে গত ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে বিশাল সামরিক অভিযান চালায়। টার্গেটে ছিল ইরানের পারমাণবিক গবেষণাগার, সামরিক ঘাঁটি, এমনকি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বাসভবন।

এই আগ্রাসনের জবাবে ইরানও পাল্টা প্রতিরোধমূলক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে। রাজধানী তেল আবিব ও হাইফায় কয়েকটি রকেট আঘাত হানে বলে ইসরায়েলি মিডিয়া জানিয়েছে। এই হামলা-পাল্টা হামলা এখনও অব্যাহত রয়েছে, যা গোটা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।

বিশ্ব নেতারা একে একে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং চীন উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভিন্ন সুর এনেছে।

তিনি গোয়েন্দা তথ্য উড়িয়ে দিয়ে একদিকে যেমন ইরানবিরোধী অবস্থান আরও জোরদার করলেন, অন্যদিকে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিশ্লেষণে দ্বিধা তৈরি করলেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ট্রাম্পের দাবির উপর ভিত্তি করে ইসরায়েল আরও আক্রমণাত্মক হয়, তবে এই যুদ্ধ আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না — এর প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যে স্পষ্ট — তিনি এখনো আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণে এক চূড়ান্ত আলোচিত চরিত্র। ইরানকে কেন্দ্র করে তাঁর এই মন্তব্য শুধু আমেরিকান রাজনীতিকেই আলোড়িত করছে না, এটি মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকেও আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে। প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে — সত্যিই কি ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে? না কি এটি নতুন কোনো ভূরাজনৈতিক খেলা?

Ingen kommentarer fundet