close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গোপন গোয়েন্দা তথ্য আর সামরিক মহড়ার মধ্য দিয়ে ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল—এমনই বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছে সিএনএন। ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে না নিলে যে কোনো মুহূর্তেই শুরু হতে পারে বিমান হামলা!..

ইরানে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল: মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস!

মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আবারও বাড়ছে উত্তেজনার পারদ। গোপন গোয়েন্দা তথ্য আর সামরিক তৎপরতার ইঙ্গিত মিলিয়ে এক ভয়ংকর বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল।

বুধবার (২১ মে) মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তার বরাতে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছে সিএনএন। সূত্রগুলো জানায়, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক প্রস্তুতি, গোপন যোগাযোগ এবং রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে—ইরানে হামলার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে।

বিশেষ করে, যদি ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ না করে এবং মজুত ইউরেনিয়াম সরিয়ে না নেয়, তাহলে ইসরায়েল সামরিক হামলা চালানোর দিকে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে। এ বিষয়ে ইসরায়েলের শীর্ষ নেতাদের মুখেও পাওয়া গেছে কঠোর হুঁশিয়ারি।

সামরিক প্রস্তুতি ও মহড়া: আক্রমণের পূর্বাভাস?

মার্কিন গোয়েন্দাদের বরাতে বলা হয়, সম্প্রতি ইসরায়েল বড় পরিসরের একটি বিমান মহড়া সম্পন্ন করেছে এবং লক্ষ্যণীয় পরিমাণ গোলাবারুদ সরিয়ে নিচ্ছে বিমানঘাঁটিতে। এই তৎপরতা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, ইসরায়েল যে কোনো সময় বিমান হামলায় নামতে পারে।

তবে শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। মার্কিন প্রশাসনের অভ্যন্তরেও এ বিষয়ে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি কেবল কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টির কৌশল, আবার অনেকে আশঙ্কা করছেন—বিষয়টি শুধুই হুমকির পর্যায়ে নেই, বরং বাস্তব হামলার প্রাথমিক ধাপ শুরু হয়ে গেছে।

ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার পেছনে ইউরেনিয়াম ইস্যু

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েই মূলত এই উত্তেজনার সূত্রপাত। ইসরায়েলের দাবি, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে এগোচ্ছে। অপরদিকে ইরান বারবার বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম শান্তিপূর্ণ এবং গবেষণা ও চিকিৎসা খাতে ব্যবহারের জন্যই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে।

এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন করে কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সম্প্রতি বলেছেন, “আমেরিকার দাবি, আমরা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করবো—এটা অত্যন্ত বাড়াবাড়ি এবং অযৌক্তিক।” একইসঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নতুন কোনো পারমাণবিক চুক্তির আলোচনা কার্যকর নাও হতে পারে।

আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া নেই, তবে উত্তেজনা তুঙ্গে

এই গোয়েন্দা তথ্য এবং সামরিক প্রস্তুতির বিষয়ে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (NSC) তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। একইভাবে, ইসরায়েলি দূতাবাস কিংবা প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকেও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, যে ধরনের সামরিক তৎপরতা ইসরায়েল চালিয়ে যাচ্ছে, তা কোনো সাধারণ মহড়া নয়। এটি মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন সংঘাতের ইঙ্গিত বহন করছে। ইসরায়েল যদি সত্যিই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, তাহলে তা পুরো অঞ্চলে বিস্ফোরক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।

যুদ্ধ না কূটনীতি—কোন পথে যাচ্ছে পরিস্থিতি?

বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি প্রশ্নই সামনে আসছে: ইসরায়েল কি কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ শেষ করে যুদ্ধের পথে হাঁটছে? নাকি এটি কেবল চাপে ফেলার কৌশল?

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান যদি আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও তার ইউরেনিয়াম কার্যক্রম চালিয়ে যায়, তাহলে ইসরায়েল হয়তো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বাধ্য হবে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের ফলাফল হবে ভয়াবহ—বিশ্ব অর্থনীতি, রাজনীতি এবং মানবিক দিক থেকে।

সুতরাং, আগামী কয়েক সপ্তাহ হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধ না কূটনীতি—মধ্যপ্রাচ্যের ভাগ্য নির্ধারণ হতে চলেছে এই সময়ে।

Nenhum comentário encontrado


News Card Generator