ঈদকে ঘিরে দুর্গাপুরের  কামার শিল্পের কারিগরদের  নেই তেমন কোন ব্যস্ততা..

Rajesh Gour avatar   
Rajesh Gour
আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তেমন কেনো ব্যস্ততা নেই নেত্রকোনার দুর্গাপুরের কামার শিল্পের কারিগরদের।..

 

 

 যদিও এক সময় কোরবানির ঈদের দুয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখরিত থাকতো দুর্গাপুরের কামার শিল্পের দোকানগুলো। সময়ের পরিক্রমায় আর আধুনিক মেশিনে তৈরি চায়না সরঞ্জামে বাজার ছেয়ে যাওয়ায় কামারশিল্পে পড়েছে ভাটা। 

সরেজমিনে  উপজেলার পৌর শহরের দেশওয়ালীপাড়ার বিভিন্ন কামার দোকান ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানির ঈদের সপ্তাহ খানেক বাকি থাকলেও কামার দোকানগুলোতে নেই ক্রেতাদের ভিড়। বছরে একবারই ভালো ব্যবসার আশায় থাকেন কামার শিল্পীরা। আশানুরূপ বিক্রি নেই বলে মন ভালো নেই কামার শিল্পীদের। আধুনিক মেশিনে তৈরি চায়না সরঞ্জাম বাজার ছেয়ে যাওয়ায় কামারশিল্পে পড়েছে ভাটা। আর এ জন্যেই   কামার কারিগরদের তৈরী দা, ছুরি, চাপাতির  চাহিদা কমে গেছে।পেশায় ভাটা পড়ায় দিন দিন কামার শিল্পীরা বংশ পরম্পরায় পাওয়া পেশা ছেড়ে খুঁজে নিচ্ছেন অন্য পেশা। এতে এই শিল্পটি হারানোর মুখে পড়েছে।  কামার শিল্পীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

দেশওয়ালীপাড়ার কামার শিল্পী পরিতোষ কর্মকার বলেন, আমি ৪০ বছর যাবত এ পেশায় আছি।
এক সময় কাজ কইরা কুল পাইতাম না, কোরবানি ঈদের   মাসখানিক আগে থিকা দিন রাইত কাজ করা লাগতো। এহন আমাদের তৈরি লোহার জিনিসপত্রের চাহিদা কমে গেছে। বেচাবিক্রি কমে যাওয়ায় আমাদের অনেকেই এ পেশা ছাইড়া দিছে। বাপ দাদার পেশা তাই কষ্ট হইলেও কোনমতে ধইরা রাখছি।

আরেক কামার শিল্পী মিটু কর্মকার বলেন, বংশপরম্পরা ধরে রাখতেই এখনো এ পেশায় জড়িয়ে আছি। বাজারের আধুনিক যন্ত্রপাতির প্রসারে আমাদের তৈরি যন্ত্রপাতির তেমন বিক্রি নেই। বর্তমান এ পেশা দিয়ে আমাদের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে

চকলেংগুরা  এলাকার কামার শিল্পী লিটন বলেন,
আধুনিক যন্ত্রপাতির দখলে বাজার হওয়ায় এখন আর কদর নেই কামার শিল্পীদের। সারাবছর যেমন তেমন এই ঈদেও আমাদের হাতে তেমন কাজ নেই। যে কারণে এই পেশার সঙ্গে জড়িত কামার শিল্পীরা কেউ ভালো নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা নির্মলেন্দু সরকার বলেন, একসময় কোরবানির ঈদের আগের এই সময়টায় কামার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যেত। তবে দিন দিন আধুনিক মেশিনে তৈরি যন্ত্রপাতি বাজার দখল করে নেওয়ায় কামারদের তৈরি জিনিসপত্রেরচাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে । সরকার যেনো এ কামার শিল্পীদের পাঁশে দাঁড়াই।

আরেক বাসিন্দা মামুন বলেন, আগে সারাদিন হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখরিত কামার দোকানগুলো। বর্তমানে আধুনিক মেশিনে তৈরি  ব্যবহৃত  সরঞ্জামের আগ্রাসনে  কামারদের ব্যবসায় ধস নেমেছে। সরকার  এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে  কামার শিল্পীদের জীবনমান উন্নয়নে  তাঁদের পাশে দাঁড়াবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুল তালুকদার বলেন, কামারদের জীবনমান উন্নয়ন নামক একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কামার শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা ও কামারদের আর্থিক সহযোগিতার আওতায় আনার পরিকল্পনা চলমান রয়েছে।

Tidak ada komentar yang ditemukan