close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ঈদযাত্রায় বকশিসের নামে ৮৩২ কোটি টাকা বাড়তি ভাড়া আদায়: যাত্রীদের সঙ্গে চরম অবিচার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
এই ঈদযাত্রায় গণপরিবহন সেক্টরের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মতে, শুধুমাত্র ঢাকা থেকে যাত্রা করেই অতিরিক্ত ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। তা..

ঈদযাত্রার সময় প্রতিবারের মতো এবারও গণপরিবহনে যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, এবার ঈদে বকশিসের নামে দেশের বিভিন্ন পরিবহনে ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। তাদের মতে, শুধু ঢাকা শহর ছাড়তে এই অতিরিক্ত অর্থ আদায় হচ্ছে, যেখানে দেড় কোটি যাত্রী এ ভাড়া দিচ্ছে।

বুধবার (২৬ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে তাদের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি অনুযায়ী, এবারের ঈদে ঢাকা থেকে এক কোটি ৫০ লাখ মানুষ গ্রামে যেতে যাচ্ছে, আর এর মধ্যে বাড়তি ভাড়া আদায়ের ঘটনায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, যদিও সরকার বাস, লঞ্চ ও অন্যান্য গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে, তবে প্রায় সব পরিবহনই তা মানছে না। তাদের মতে, এবারের ঈদে ৯৮ শতাংশ গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

এছাড়া, নৌপথে পরিবহন করা যাত্রীদের কাছ থেকে যাত্রীপ্রতি ৫০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় হচ্ছে। এর ফলে, শুধু নদীপথে ঈদের আগেই ৮০ কোটি টাকা অতিরিক্ত আদায় হতে পারে। সড়ক ও নৌপথের পরিবহন মালিকদের বিরুদ্ধে মনিটরিং টিম থাকলেও যাত্রীদের স্বার্থরক্ষায় তেমন কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক এবং প্যাডেলচালিত রিকশার মতো পরিবহনে ঈদ বকশিসের নামে যাত্রীপ্রতি গড়ে ২০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ঢাকা শহরে প্রায় ৮ লাখ ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং প্যাডেলচালিত রিকশা চলাচল করছে, যা যাত্রীদের পকেট কাটছে।

অন্যদিকে, হিউম্যান হলার নামক ৭ হাজার লেগুনা, দুরস্ত, দিগন্ত ও অন্যান্য পরিবহনের যাত্রীদেরও বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে। এসব পরিবহনগুলো ঈদের আগে যাত্রীপ্রতি প্রায় ২০ টাকা বেশি ভাড়া আদায় করছে।

এছাড়া, প্রাইভেটকার, জিপ ও মাইক্রোবাসে যাত্রীদের ৩ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে, যা সব মিলিয়ে ২১ কোটি টাকা হয়। দূরপাল্লার বাস-মিনিবাসেও ৩০০ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় হচ্ছে, যার ফলে ৯০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হবে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ঈদে ট্রেনের ছাদে যাত্রী পরিবহন ঠেকানোর জন্য সরকার নানা ব্যবস্থা নিলেও, কম খরচে যাতায়াতের জন্য নিম্নআয়ের মানুষ ট্রেনের ছাদে চড়ে যাত্রা করে থাকে। ফলে, ৮০ হাজার যাত্রীকে কমপক্ষে ১০০ টাকা করে ঘুষ দিতে হয়। খাবার গাড়ি, ইঞ্জিন এবং কোচের ভেতরে বিনা টিকিটে যাত্রীদের প্রায় ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হবে।

এছাড়া, সিটি বাস সার্ভিসগুলোও ঈদের আগে অতিরিক্ত ৩০ টাকা ভাড়া আদায় করছে। এমন পরিস্থিতিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি অভিযোগ করেছে যে, পরিবহন মালিকদের সিন্ডিকেট এবং সরকারের অবহেলার কারণে যাত্রীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা ঈদের আগে গণপরিবহন থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে শক্তিশালী তদারকি ব্যবস্থা গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

সংগঠনটি জানিয়েছে, ঈদযাত্রায় যাত্রীদের সঙ্গে এমন অবিচারের বিরুদ্ধে একযোগভাবে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

Комментариев нет