close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ই স রা য়ে লে র হা ম লা য় ১০ আইআরজিসি সদস্য নি হ ত

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় নিহত অন্তত ১০ আইআরজিসি সদস্য। ধ্বংস ১৫টি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার। চুপ ইরান, ক্ষেপেছে তেলআভিভ।..

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এবার ইসরায়েল সরাসরি আঘাত হানল ইরানের ভেতরেই। রবিবার (২২ জুন) ইরানের ইয়াজদ প্রদেশে চালানো এক ভয়াবহ হামলায় ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) অন্তত ১০ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইরানি সংবাদ সংস্থা তাসনিম।

এ হামলায় আরও একাধিক আইআরজিসি সদস্য আহত হয়েছেন, যদিও তাদের সঠিক সংখ্যা জানায়নি তাসনিম। তবে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর বিষয় হচ্ছে, ইসরায়েল দাবি করেছে যে, চলতি মাসের ১৩ তারিখ থেকে শুরু হওয়া একাধিক ধারাবাহিক হামলায় ইতোমধ্যে তারা ইরানের অন্তত দুই ডজন সামরিক কমান্ডার ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে!

তবে এখানেই থামেনি ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনী একযোগে ইরানের পশ্চিম, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের ছয়টি কৌশলগত বিমানবন্দরে বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে ইরানের সামরিক ও প্রতিরক্ষা কাঠামো চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এক্স (পূর্বের টুইটার)–এ দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এই হামলায় ব্যবহার করেছে দূরনিয়ন্ত্রিত ড্রোন ও মানবচালিত আকাশযান (ম্যানড অ্যান্ড রিমোট সিস্টেম)। এই সমন্বিত আক্রমণে ইরানের বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটির রানওয়ে, ভূগর্ভস্থ বাংকার এবং জ্বালানিবাহী উড়োজাহাজ ধ্বংস হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ইরানের ব্যবহৃত এফ-১৪, এফ-৫ যুদ্ধবিমান এবং এএইচ-১ হেলিকপ্টারগুলোও গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি অনুযায়ী, এর ফলে ইরানের বিমানঘাঁটিগুলো থেকে উড্ডয়ন সক্ষমতা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে এবং দেশটির সামরিক আকাশ অভিযান কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।

সবচেয়ে বিস্ময়কর দিক হলো, এতবড় ধ্বংসাত্মক আঘাতের পরেও এখন পর্যন্ত ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি আসেনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নীরবতা হয়ত বড় কিছু প্রত্যাঘাতের ইঙ্গিত বহন করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার এক সময়ের দেওয়া কৌশলগত প্রস্তাব যদি ইরান গ্রহণ করত, তাহলে হয়তো দেশটি এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়ত না। ইরানকে ঘিরে রাশিয়া, চীন ও সিরিয়া–সবাই এখন চুপ। ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ইরান একাকী হয়ে পড়েছে।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান যুদ্ধক্ষেত্র এখন শুধু দুই দেশের ভেতর সীমাবদ্ধ নেই। এ হামলার প্রেক্ষিতে লেবানন, সিরিয়া, ইরাকসহ আশপাশের দেশগুলোতেও উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই হামলা হয়ত আরেকটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সূচনা হয়ে উঠতে পারে।

বিশ্বরাজনীতির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ইরান এবার পাল্টা জবাব দেয়, তবে এটি শুধু ইসরায়েল নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে ভয়াবহ অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেবে। আর সেই আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও।

ইসরায়েলের এই সর্বনাশা হামলা শুধু ১০টি প্রাণই কাড়েনি, এটি ইঙ্গিত দিয়েছে আরও বড় যুদ্ধের। ইরান কি এবার চুপ থাকবে, না ভয়ঙ্কর পাল্টা আঘাত আনবে—তা সময়ই বলবে। তবে এতটুকু নিশ্চিত—এই যুদ্ধের ছায়া এখন আর কেবল ইয়াজদ, তেহরান কিংবা তেলআভিভে সীমাবদ্ধ নেই—সারাবিশ্ব থমকে তাকিয়ে আছে।

Nema komentara


News Card Generator