ই স রা য়ে ল কে বাঁচিয়েছে যু ক্ত রা ষ্ট্র, বললেন ট্রা ম্প

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিচার বন্ধ করে ক্ষমা চাইলেন ট্রাম্প। বললেন, “আমেরিকা ইসরায়েলকে বাঁচিয়েছে, এবার নেতানিয়াহুকেও বাঁচাবে।” ওয়াশিংটনের ইরানবিরোধী সহায়তার দিকেও ইঙ্গিত স্পষ্ট।..

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের আলোচনার কেন্দ্রে। এবার তিনি এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেছেন, "আমেরিকাই ইসরায়েলকে বাঁচিয়েছে, এখন নেতানিয়াহুকেও রক্ষা করবে।" তাঁর এমন বক্তব্য শুধু আন্তর্জাতিক কূটনীতিক পরিসরেই নয়, বরং ইসরায়েলি অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

ট্রাম্প এই বক্তব্য দিয়েছেন নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম "ট্রুথ সোশ্যাল"-এ পোস্ট করে। তিনি স্পষ্টভাবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির বিচার বন্ধের দাবি জানান। তার ভাষ্য, “নেতানিয়াহুর বিচার অবিলম্বে বাতিল করা উচিত, অথবা এমন এক মহান নায়ককে ক্ষমা করা উচিত, যিনি ইসরায়েলের জন্য অনেক কিছু করেছেন।”

এমন একটি সময় এই মন্তব্য এসেছে, যখন নেতানিয়াহু দুর্নীতির মামলায় আদালতে হাজির হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ট্রাম্প নিজেই জানান, সোমবার নেতানিয়াহুর আদালতে উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।

ট্রাম্পের দাবি, ইসরায়েল আজ যেখানে দাঁড়িয়ে, তার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। বিশেষ করে তাঁর প্রশাসনের সময় ওয়াশিংটন যেমনভবে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়েছে—তা নজিরবিহীন। তিনি বলেন, “ইসরায়েলকে বাঁচিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, আর নেতানিয়াহুকেও রক্ষা করবে যুক্তরাষ্ট্রই।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প মূলত নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ রক্ষার কৌশলই নিচ্ছেন। এটি তার দীর্ঘদিনের এক ঘনিষ্ঠ মিত্রকে সহায়তার একটি প্রচেষ্টা, বিশেষ করে যখন নেতানিয়াহু নিজ দেশ ও বিশ্বমঞ্চে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি।

টিআরটি ওয়ার্ল্ড-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের এই মন্তব্য শুধু নেতানিয়াহুর বিচার নিয়েই সীমাবদ্ধ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ভূমিকার দিকেও স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে। তিনি মূলত সেই সহায়তার কথা বলছেন, যার মাধ্যমে ওয়াশিংটন ইরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলের অবৈধ হামলার পক্ষে অবস্থান নেয় এবং কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি হামলাও চালায়।

এখানেই শেষ নয়। ট্রাম্পের এমন বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন গাজা যুদ্ধ, ইরানবিরোধী অভিযান এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ইসরায়েলকে বড় ধরনের চাপে ফেলেছে। নেতানিয়াহুর সরকার ঘরে-বাইরে প্রবল সমালোচনার মুখে। দেশটির নাগরিকরাও মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধের দায় নিয়ে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বের সমালোচনা করছে।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাগুলো নতুন নয়। এর আগে একাধিকবার এসব মামলা আদালতে গড়িয়েছে। তবে ট্রাম্পের মতো একজন প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব যখন বিচার বন্ধের দাবি তোলেন, তখন বিষয়টি শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং কূটনৈতিক চাপেও পরিণত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের মন্তব্য ইসরায়েলের আইন বিভাগে প্রভাব ফেলতে না পারলেও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং জনমতের ওপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে। অনেকে আশঙ্কা করছেন, এটি বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করতে পারে এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

ট্রাম্পের এই বক্তব্য কেবল একটি সমর্থন নয়, বরং আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক নতুন রূপরেখার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তিনি নেতানিয়াহুকে ‘নায়ক’ বলে অভিহিত করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন—এমন একজন নেতার জন্য, যিনি নিজ দেশে এখন বিচারের মুখে।
বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি শুধু এক বন্ধুর প্রতি আনুগত্য নয়, বরং ভবিষ্যতের মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির একটি প্রকাশও।

Inga kommentarer hittades


News Card Generator