close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ই রা নে র পা রমা ণ বিক কর্মসূচি নিয়ে ই স রা য়ে ল -যু ক্ত রা ষ্ট্র মিথ্যাচার করেছে, রা শি য়া..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাশিয়া বলছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। আইনের বরখেলাপ হামলার জন্য এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।..

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক উত্তেজনা আবারও তুঙ্গে। এবার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনল রাশিয়া। জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া প্রকাশ্যে জানান, ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো সত্যতা নেই, বরং এসব অভিযোগের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে ভুয়া অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী হামলার অজুহাত তৈরি করেছে। এতে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য তেজস্ক্রিয় দূষণের হুমকি তৈরি হয়েছে।”

রাশিয়ার এই কূটনীতিক আরও বলেন, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) কখনোই ইরানের ইউরেনিয়াম মজুদের সামরিক রূপান্তরের কোনো প্রমাণ পায়নি। “আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছি— আইএইএ-এর রিপোর্টে কোথাও বলা হয়নি যে ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমরা এখনো ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো কাঠামোগত বা পদ্ধতিগত প্রচেষ্টার প্রমাণ পাইনি।” তবে তিনি স্বীকার করেছেন, “৬০% পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে, কারণ এটি অস্ত্র তৈরির সীমার কাছাকাছি।”

এই উদ্বেগ ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র বারবার ব্যবহার করেছে ইরানকে ‘নতুন উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু’ বানাতে। কিন্তু রাশিয়া এই অবস্থানকে ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক চক্রান্ত বলেই মনে করছে।

অন্যদিকে, একই দিন নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেন, “১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখা।”

তবে ইরান এই দাবিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি, “আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং আইএইএ’র নজরদারির আওতায় পরিচালিত।” ইরান সরকার ইসরায়েলি হামলাকে ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, “এই ধরনের আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করে।”

ইরান এরইমধ্যে আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা সীমিত করার হুমকি দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ও কূটনৈতিক সম্পর্ককে জটিল করে তুলতে পারে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো— যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েল মঙ্গলবার থেকে একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে। যদিও অনেক বিশ্লেষক বলছেন, এই যুদ্ধবিরতি আপাত শান্তি আনলেও, ভবিষ্যতে এর স্থায়িত্ব নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।

এদিকে রাশিয়ার এমন প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কূটনৈতিক মেরুকরণ তৈরি করতে পারে। কারণ, রাশিয়া এখন শুধু একটি শক্তিধর জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যই নয়, বরং পশ্চিমা জোটবিরোধী বলয়ের একটি প্রভাবশালী কণ্ঠস্বর।

রাশিয়ার এই বক্তব্য শুধু ইরান-ইসরায়েল বিরোধ নয়, বরং বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক নাটকের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশ্ব এখন দুটি দিক থেকে তাকিয়ে আছে—
একদিকে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির দাবি, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নিরাপত্তা-ভিত্তিক আশঙ্কা।
এর মাঝে রাশিয়ার কণ্ঠ আরও স্পষ্ট করে বলছে, এই নাটকের পেছনে রয়েছে রাজনীতি, অপপ্রচার, এবং বৈশ্বিক শক্তির মারপ্যাঁচ।

نظری یافت نشد


News Card Generator