প্রবন্ধটির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সুরা আল-ইনশিরাহ-এর দুটি আয়াত:
-
বাংলা অর্থ: "নিশ্চয় কষ্টের সঙ্গে রয়েছে স্বস্তি। নিশ্চয় কষ্টের সঙ্গে রয়েছে স্বস্তি।" (সুরা ইনশিরাহ: আয়াত ৫-৬)
-
আরবি পাঠ: \text{اِنَّ مَعَ الۡعُسۡرِ یُسۡرًا} (নিশ্চয় কষ্টের পরে রয়েছে স্বস্তি। - আয়াত ৬)
২. কুরআনিক ব্যাকরণের তাৎপর্য
প্রবন্ধটিতে মুফাসসিরদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে:
-
কষ্ট: কষ্টের আরবি শব্দ 'আল-উসরি'-এর আগে 'আল' (the) ব্যবহার করা হয়েছে, যা এটিকে নির্দিষ্ট করে দেয় (Definite)।
-
স্বস্তি: স্বস্তির আরবি শব্দ 'ইউসরা'-এর আগে 'আল' ব্যবহার করা হয়নি, যা এটিকে অনির্দিষ্ট রাখে (Indefinite)।
-
তাৎপর্য: যেহেতু আয়াতে নির্দিষ্ট একটি কষ্টের কথা বলা হয়েছে এবং 'নিশ্চয় কষ্টের সঙ্গে রয়েছে স্বস্তি' কথাটি দুইবার বলা হয়েছে, তাই মুফাসসিররা ব্যাখ্যা করেন যে, একটি কষ্টের বিপরীতে একাধিক স্বস্তি, প্রশান্তি, সুযোগ বা সাফল্য আসবে। অর্থাৎ, বিপদ বা সংকট কখনোই চিরস্থায়ী নয়।
৩. জীবনবোধ ও প্রেরণা
প্রবন্ধটি মানব জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে এই আয়াতের মাধ্যমে গভীর অনুপ্রেরণা যোগায়:
-
কষ্ট জীবনের অংশ: মানুষের জীবন বাঁক, চড়াই-উৎরাই, দুঃখ ও ব্যর্থতায় পূর্ণ। তবুও মানুষ থেমে থাকে না।
-
স্বর্গীয় সান্ত্বনা: এই আয়াতটি প্রতিটি কষ্টগ্রস্ত মানুষের জন্য স্বর্গীয় সান্ত্বনা হিসেবে কাজ করে, যা বেঁচে থাকার সাহস, বিপদে ধৈর্য এবং ভবিষ্যতের প্রতি ভরসা তৈরি করে।
-
কষ্ট মানে শেষ নয়: কষ্ট হলো একটি প্রস্তুতির সময়—যা মানুষকে আরও পরিণত ও পরিশুদ্ধ করে।
-
রাসূল (সা.)-এর আদর্শ: মহানবী (সা.)-এর জীবনেও অসংখ্য দুঃখ-কষ্ট থাকা সত্ত্বেও তিনি কখনো হতাশ হননি; আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রেখে এগিয়ে গেছেন।
-
আশার প্রদীপ: জীবনের কঠিন মুহূর্তে এই আয়াতটি পথ হারানো মানুষের জন্য আশার প্রদীপের মতো, যা তাদের স্থিরতা দেয় এবং আশাবাদী হতে শেখায়।



















