close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

হিংস্র ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে মহাযুদ্ধ শুরু করেছে: চরমোনাই পীর..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েল শুধু ফিলিস্তিন নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করেছে—এমনটাই বললেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর। তিনি বলেন, জাতিসংঘ ও ওআইসির নীরবতা এই গণহত্যাকে বৈধতা দিচ্ছে। আর ..

ইসরায়েল তার আগ্রাসী নীতির মাধ্যমে শুধু ফিলিস্তিন নয়, বরং গোটা মধ্যপ্রাচ্যে এক ভয়ংকর মহাযুদ্ধের সূচনা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক জোরালো বিবৃতিতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিরবতা, আরব রাষ্ট্রগুলোর আত্মসমর্পণ এবং ইসরায়েলের বেপরোয়া আচরণের তীব্র সমালোচনা করেন।

চরমোনাই পীর বলেন, “১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকেই মানবতার বিরুদ্ধে তারা অপরাধ করে আসছে। একের পর এক গণহত্যা, দখল ও নিপীড়নের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করেছে, তারা মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে বিশ্বাসী। বিগত দেড় বছরে ফিলিস্তিনের ওপর চালানো তাদের বর্বরতা ইতিহাসে এক ভয়ংকর কালিমা হয়ে থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “আশ্চর্যের বিষয় হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো এই গণহত্যায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে। পক্ষান্তরে, বেশিরভাগ আরব রাষ্ট্র চুপচাপ থেকে সেই বর্বরতাকে সমর্থন করছে। কিছু রাষ্ট্র তো সরাসরি সহায়তাও দিচ্ছে। এ এক নির্মম প্রহসন! ইতিহাসে এমন নির্মম গণহত্যা ও সেই সঙ্গে এমন করুণ চুপচাপ থাকা খুব কমই দেখা গেছে।

 

চরমোনাই পীর আরও বলেন, “ফিলিস্তিনে গণহত্যার পর এবার ইরানের ওপর হামলা করে ইসরায়েল নিজেদের সীমালঙ্ঘন স্পষ্ট করে দিয়েছে। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর যে অসভ্য ও নিষ্ঠুর হামলা চালানো হয়েছে, আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। নিহত সকল ইরানী সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”

তিনি মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে যুদ্ধের আগুন জ্বলছে, এবং ইসরায়েলের এই হিংস্রতা গোটা মুসলিম উম্মাহকে নিরাপত্তাহীন করে তুলছে।

 

চরমোনাই পীর জাতিসংঘ, আরব লীগ এবং ওআইসিকে কার্যত “মৃত” সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, “এত বড় গণহত্যা ও সামরিক আগ্রাসনের পরও তারা নিশ্চুপ। এদের অস্তিত্ব এখন প্রশ্নবিদ্ধ। এখন সময় এসেছে এসব সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন করে ভাবার।”

তিনি বলেন, “আরব রাষ্ট্রগুলোর সরকার ও নেতারা যে নগ্নভাবে ইসরায়েল ও পশ্চিমাদের তাঁবেদারি করছে, তাতে তারা মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব দেওয়ার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে।”

 

তিনি বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনতার উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা আর চুপ করে থাকতে পারেন না। এখন সময় এসেছে নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্য নিজ নিজ দেশের সরকারকে চাপ দেওয়ার। যদি আমাদের নেতারা না দাঁড়ায়, তবে জনগণকে বাধ্য করতে হবে তাদের। সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।

 

পীর সাহেব ইউরোপ ও আমেরিকার সাধারণ জনগণের প্রতিও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আপনারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, মানবতার কথা বলেন—তাহলে এবার আপনাদের রাজপথে নামতে হবে। আপনাদের সরকারের ওপর চাপ দিন, যাতে তারা ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে পদক্ষেপ নেয়। না হলে ইতিহাস আপনাদেরও অপরাধে অংশীদার হিসেবে মনে রাখবে।”

 

বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, “বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এখন সময় এসেছে নতুন করে শক্ত অবস্থান নেওয়ার। প্রতিটি আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের উচিত শান্তির পক্ষে এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রস্তাব উত্থাপন করা। ফল না হলেও ইতিহাসে আমাদের প্রচেষ্টার সাক্ষ্য থাকবে।”

তিনি বলেন, “সভ্যতা ও মানবতার স্বার্থেই এই হিংস্র ইসরায়েলি দানবকে থামাতে হবে। আমাদের নীরবতা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অভিশাপ হয়ে উঠবে।

 

চরমোনাই পীরের এই বিবৃতি শুধু একটি রাজনৈতিক দলীয় অবস্থান নয়, বরং এটি বিশ্বের নির্যাতিত জনগণের পক্ষ থেকে এক গর্জন। এখন সময় এসেছে মুসলিম জনতা, মানবতাবাদী নাগরিক ও স্বাধীনচেতা রাষ্ট্রসমূহের জেগে ওঠার। নয়তো মানবতা ইতিহাসের পাতায় লাল রক্তে হারিয়ে যাবে।

Walang nakitang komento


News Card Generator